দক্ষিণ ইউক্রেনের রাশিয়ান নিয়ন্ত্রিত অংশে একটি সুবিশাল সোভিয়েত যুগের বাঁধ আক্রমণ চালিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এটি ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে দুই পক্ষ। এমন অবস্থায় রুশ নিয়ন্ত্রিতসহ ইউক্রেনের বিশাল অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে। বাঁধ ধ্বংসের জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করেছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে কাখোভকা বাঁধের চারপাশে একের পর এক তীব্র বিস্ফোরণ দেখা গেছে। অন্যান্য ভিডিওতে দেখা গেছে যে, বাঁধের অবশিষ্টাংশের মধ্য দিয়ে পানির ঢেউ বয়ে যাচ্ছে।
৩০ মিটার চওড়া এবং ৩.২ কিমি (২ মাইল) লম্বা বাঁধটি ১৯৫৬ সালে কাখোভকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অংশ হিসাবে ডিনিপ্রো নদীর উপর নির্মিত হয়েছিল। এটিতে একটি বৃহৎ জলাধার রয়েছে যা ২০১৪ সালে রাশিয়া দ্বারা সংযুক্ত করা ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে এবং জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রে পানি সরবরাহ করে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে রুশ বাহিনী বাঁধটি উড়িয়ে দিয়েছে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর দক্ষিণ কমান্ড মঙ্গলবার ফেসবুক পেজে বলেছে, ‘কাখোভকা (বাঁধ) রাশিয়ান দখলদার বাহিনী উড়িয়ে দিয়েছে। ধ্বংসের স্কেল, পানির গতি, আয়তন এবং প্লাবনের সম্ভাব্য এলাকাগুলো স্পষ্ট করা হচ্ছে।’
রাশিয়ান বার্তা সংস্থাগুলো বলেছে যে, রুশ বাহিনীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বাঁধটি গোলাগুলিতে ধ্বংস হয়ে গেছে। রাশিয়ান-স্থাপিত একজন কর্মকর্তা বলেছিলেন যে, এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা।
রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে উভয় পক্ষ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রের হিসাব যাচাই করতে পারেনি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্প্রতি বলেছিলেন যে, তারা রাশিয়ার মোকাবেলায় পুরোদমে হামলা চালাতে প্রস্তুত। এরপরই সোমবার দেশটির সেনাবাহিনী প্রধান যুদ্ধক্ষেত্র বাখমুতে অগ্রসর হওয়ার দাবি করেছে। অপরদিকে রাশিয়া ইউক্রেনের হামলা প্রতিরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে।
রাশিয়ার সেনাবাহিনী বলেছে যে, তারা সোমবারের হামলা প্রতিহত করেছে। ইউক্রেন যুদ্ধে বাখমুত কয়েক মাস ধরে ভয়ঙ্কর লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। কৌশলগতভাবে বাখমুতের খুব বেশি গুরুত্ব না থাকলেও এটি এখন কিয়েভ এবং মস্কো উভয়ের জন্যই প্রতীকীভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হানা মালিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, কঠোর প্রতিরোধ এবং শত্রুদের তাদের অবস্থান ধরে রাখার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আমাদের সামরিক ইউনিটগুলো লড়াইয়ের সময় বিভিন্ন দিকে অগ্রসর হয়েছিল।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, তার দেশের কাছে এখন পাল্টা আক্রমণের জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্র রয়েছে। তবে এটি শুরু হয়েছে কিনা সে বিষয়ে মন্তব্য করবেন না তিনি।