• বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন

৭ বছর পর সৌদিতে দূতাবাস চালু করল ইরান

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩

ফাইল ছবি

সৌদি আরবে নিজেদের দূতাবাস পুনরায় চালু করেছে ইরান। আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী এই দু’টি দেশ তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সাত বছর পর আবারও তা চালু হলো। এদিকে সৌদিতে দূতাবাস পুনরায় চালু করাকে সহযোগিতার ‘নতুন যুগে প্রবেশ’ বলে আখ্যায়িত করেছে ইরান।

মঙ্গলবার (৬ জুন) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আবার দূতাবাস চালু করেছে। সৌদি মালিকানাধীন আল আরাবিয়া টিভি জানিয়েছে, রিয়াদে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে ইরান ও সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলিরেজা বিগডেলি বলেছেন, ইরান ও সৌদির মধ্যে সহযোগিতা যে ‘নতুন যুগে প্রবেশ করছে’ এই পদক্ষেপ সেটিই প্রকাশ করেছে। মূলত চীনের মধ্যস্থতায় উপসাগরীয় দেশগুলো ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সম্মত হওয়ার তিন মাস পর দূতাবাস চালু করা হলো।

এর আগে গত শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। ওই বৈঠকে উভয় দেশের ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভালো অগ্রগতি’ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও প্রিন্স ফারহানকে উদ্ধৃত করে বলেছে, তেহরানে সৌদি দূতাবাস পুনরায় খোলার ভিত্তি তৈরি করা হচ্ছে এবং ‘শিগগিরই’ তার তেহরান সফরের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হচ্ছে।

এর আগে দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর গত মার্চ মাসে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয় মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরব। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবার বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাও শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

অবশ্য ২০১৬ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। সেবছর সৌদি আরব এক শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে নাটকীয় অবনতি ঘটে।

মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।

এছাড়া সিরিয়া এবং ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংঘাতে ইরান ও সৌদি একে অপরের বিরোধী পক্ষ হয়ে কার্যত পরোক্ষ লড়াইয়ে নিয়োজিত রয়েছে। আর তাই সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়া নেতৃত্বাধীন ইরানের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই অনেক বেশি ছিল।

সংবাদমাধ্যম বলছে, সিরিয়া, লেবানন ও ইরাকে প্রভাব বিস্তারের জন্য লড়াই করছে ইরান ও সৌদি আরব। এছাড়া এই দেশ দু’টি ইয়েমেনসহ এই অঞ্চলজুড়ে বেশ কয়েকটি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষকে সমর্থন করে। ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীরা তেহরানের সাথে জোটবদ্ধ এবং অন্যদিকে সরকারকে সমর্থনকারী একটি সামরিক জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে রিয়াদ।

তবে দীর্ঘদিনের বৈরীতার অবসান ঘটিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী গত ১০ মার্চ চীনের মধ্যস্থতায় পুনরায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকের এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। আর এরই ধারবাহিকতায় সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আবার দূতাবাস চালু করল ইরান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ