ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লা শহরে অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) গভীর রাত ও ভোরে চালানো এই অভিযানের জেরে সেখানে সংঘর্ষ শুরু হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
অবশ্য রামাল্লা শহরে ইসরায়েলের এই ধরনের অভিযান বেশ বিরল। মূলত এই শহরটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কার্যত প্রশাসনিক রাজধানী হিসাবে কাজ করে থাকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি বাহিনী অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি শহর রামাল্লায় বিরল অভিযান চালানোর পরে সংঘর্ষ শুরু হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, সেখানে এক হামলাকারীর বাড়ি ভেঙে ফেলার জন্য এই অভিযান চালানো হয়েছে।
রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিশাল সামরিক কনভয় ফিলিস্তিনি সরকারের প্রশাসনিক কেন্দ্র রামাল্লা শহরের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছায়। পরে কয়েকশ ফিলিস্তিনি ওই এলাকায় জড়ো হন।
ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, একপর্যায়ে কিছু ফিলিস্তিনি যুবক ইসরায়েলি বাহিনীর দিকে ঢিল নিক্ষেপ করে। এর আগে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ভিড়ে তাজা বুলেট, স্টান গ্রেনেড এবং টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এসময় অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজতে শোনা যায় এবং বিক্ষুব্ধরা ট্র্যাশ বিনে আগুন লাগিয়ে রাস্তা অবরুদ্ধ করেন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অন্তত ছয়জনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের বাহিনী রামাল্লায় ‘গত নভেম্বরে জেরুজালেমে বোমা হামলাকারী সন্ত্রাসীর বাসভবন গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য’ অভিযান পরিচালনা করছে। সেসময় জোড়া বিস্ফোরণে ইসরায়েলি-কানাডিয়ান এক কিশোরসহ দুইজন নিহত এবং কমপক্ষে ১৪ জন আহত হয়েছিলেন।
ইসরায়েল দাবি করেছে, অপরাধীদের বাড়ি ভেঙে ফেলার এই নীতি শাস্তিমূলক এবং একইসঙ্গে এটি সম্ভাব্য আক্রমণকারীদের রুখতে কাজ করবে।
আল জাজিরা বলছে, এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে ফিলিস্তিনে নিযুক্ত মার্কিন দূত হাদি আমর ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা হুসেইন আল-শেখের সঙ্গে দেখা করেন।
মূলত যেসব অঞ্চল নিয়ে ফিলিস্তিনিরা রাষ্ট্রের মর্যাদা চায় তার মধ্যে পশ্চিম তীর রয়েছে। তবে সেখানে সহিংসতা গত বছর থেকে বেশ বেড়েছে। পশ্চিম তীরের শহরগুলোতে সামরিক অভিযান জোরদার করেছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ইসরায়েলের হাতে অন্তত ১৫৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একই সময়ে ফিলিস্তিনি হামলায় ২০ জন ইসরায়েলি ও দুই বিদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন।