• বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪২ পূর্বাহ্ন

বগুড়া (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) -১ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীরা ব্যস্ত গণসংযোগ নিয়ে

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩

নৌকার টিকিট পেতে ৫ জন, ধানের শীষ ৪ জন, লাঙ্গল ১ জন ও জামায়াতে ১ জন প্রার্থী মাঠে * জনসমর্থনে এগিয়ে শাহাজাদী আলম লিপি

পাভেল মিয়া, সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ ২০২৩ সালের শেষ কিংবা আগামী ২০২৪ সালের শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবে কয়েকমাস আগে থেকে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তৎপরতা শুরু করেছেন। শুরু করেছেন মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ। সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে করছেন শুভেচ্ছা বিনিময়।
বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয় প্রত্যাশীরা হলেন-বর্তমান সাংসদ সাহাদারা মান্নান, মেধা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক এবং সংবাদ সংযোগ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক শাহজাদী আলম লিপি, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সহ-সভাপতি ম. আব্দুর রাজ্জাক। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক সাবেক সাংসদ মরহুম সিরাজুল ইসলাম সুরুজের ছেলে সাবেক ছাত্রনেতা এস এম মোজাহেদুল ইসলাম বিপ্লব, ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপ ও ওয়ানফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ কেএসএম মোস্তাফিজার রহমান শ্যামল।

আসনটিতে নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকার মনোনয়ন পেতে দীর্ঘ দিন থেকেই শাহজাদী আলম লিপি সারিয়াকান্দি-সোনাতলা উপজেলার নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর শহরে গণসংযোগ, উঠোন বৈঠক, কর্মীসমাবেশ ও পথসভা করে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে করছেন মতবিনিময়। শুভেচ্ছা সংবলিত পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন সাঁটিয়েছেন। চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণাও। তুলে ধরছেন বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ও জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তাই চলমান উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে ফের সরকার গঠনে সুযোগ দেয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। গত কয়েকদিনে সারিয়াকান্দি-সোনাতলা উপজেলা সরেজমিনে, কুতুবপুর বাজার, বড় কুতুবপুর পূর্বপাড়া, প্রামানিক পাড়া, জোড়গাছা বাজার, কড়িতলা বাজার, নিউ সোনাতলা ও পূর্ব ছাগলধরা গ্রাম, কর্ণিবাড়ী, ভেলাবাড়ী, নারচী, হাটশেরপুর, হাসনাপাড়া, চালুয়াবাড়ী এবং সোনাতলা উপজেলার সোনাতলা সদর ইউনিয়ন, পাকুল্লা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ও পূর্ব সুজাইতপুর, তেকানীচুকাইনগর, মহেশ পাড়া, রাধাকান্তপুর, মধুপুর, জোড়গাছা, দিগদাইড় ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে শাহাজাদী আলম লিপি জনপ্রতিনিধি না হয়েও উপজেলার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক উন্নয়নে জন্য বিলিয়ে দিচ্ছেন আর্থিক অনুদান। সারিয়াকান্দি সোনাতলা মানুষের ভরসার জায়গা থেকে শাহাজাদী আলম লিপি’র নাম উঠে এসেছে।

এছাড়াও প্রতি ঈদ ও পূজার সময় দরিদ্র অসহায় মানুষদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে মানুষের মনিকোঠায় স্থান দখল করে নিয়েছেন। প্রতিনিয়ত মানুষের পাশে থেকে সমস্যা সমাধান করে উপজেলাবাসীর আত্মার আত্মীয় হয়েছেন। এ আসন থেকে তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন বলে এলাকাবাসী অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এমনকি বাঙালী ও যমুনা নদীর মধ্যবর্তী তিন ইউনিয়নবাসীর একই কথা লিপি আপা ভালো লোক, জয়ের মালা তারই হোক।

লিপি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের একজন তৃণমূলকর্মী হিসেবে দীর্ঘ দিন ধরে উঠান বৈঠক করেছি। সেখানে দুই উপজেলার মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয়েছে। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কথা বলেছি। তুলে ধরছি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের উন্নয়ন চিত্র। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি বড় দল, একটি ঐতিহ্যবাহী দল, দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে এই দলটি। এখন তাদের লক্ষ্য দেশের উন্নয়ন। নিশ্চয়ই নেত্রী আমার কাজের মূল্যায়ন করবেন। তাই আমার প্রত্যাশা আমি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাব।

২০২০ সালের ১৮ জানুয়ারি আব্দুল মান্নান মৃত্যুবরণ করেন। আসনটি শুন্য হলে ১৪ জুলাই আসনটিতে উপ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে আব্দুল মান্নানের সহধর্মিণী সাহাদারা মান্নান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে রয়েছে সংশয়। নেতৃত্ব পরিবর্তনের জন্য দলের একটি বড় প্রকাশ্যেই মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। তবে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ও অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে পুনরায় নৌকার মনোনয়ন পেতে গণসংযোগ এবং উঠোন বৈঠক শুরু করেছেন বর্তমান সাংসদ সাহাদারা মান্নান।

এ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেতে ইতিমধ্যেই লবিং, বিভিন্ন ধরনের সভা, সমাবেশ, এবং বিভিন্ন বাজার এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ম. আব্দুর রাজ্জাক। নৌকার মনোনয়ন পেতে এলাকায় ব্যানার পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছেন ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপ ও ওয়ানফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থপনা পরিচালক কৃষিবিদ কেএসএম মোস্তাফিজার রহমান শ্যামল। সাবেক ছাত্রনেতা এস এম মোজাহেদুল ইসলাম বিপ্লব এলাকায় তেমন সময় দিতে না পারলেও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক সাবেক সাংসদ মরহুম সিরাজুল ইসলাম সুরুজের ছেলে হিসেবে এলাকায় বিশেষভাবে পরিচিত। তিনিও এবার সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে নৌকার মনোনয়ন চাইবেন।

বি এন পি থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় ধানের শীষের মনোনয়ন পেতে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশগ্রহন এলাকায় গণসংযোগ এবং বিভিন্ন সভা সমাবেশ শুরু করেছেন বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও সোনাতলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির। ইতিমধ্যেই ধানের শীষের মনোনয়ন পেতে লবিং গ্রুপিং এবং সভা সমাবেশে সরব রয়েছেন সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব কাজি রফিকুল ইসলাম। ২০০১ সালের ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাজী রফিকুল ইসলাম ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ধানের শীষের মনোনয়ন পেতে গণসংযোগ শুরু করেছেন জিয়া শিশু কিশোর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন চৌধুরী এবং সাবেক সারিয়াকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদুর রহমান হিরু মন্ডল।

জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতীক পেতে ইতিমধ্যেই দলের হাইকমান্ডের সাথে যোগাযোগ এবং এলাকায় গণসংযোগ এবং সভা সমাবেশ শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় জাপার সদস্য ও উপজেলা জাপার সভাপতি অধ্যক্ষ মোকছেদুল আলম। জামায়াতের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, এ আসনে তাদের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে জামায়াতের সাবেক জেলা আমির এবং বর্তমান কেন্দ্রীয় জামায়াতের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শাহাবুদ্দিন জামায়াত থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচন করবেন। এছাড়া সোনাতলা উপজেলা ইসলামিক আন্দোলনের সভাপতি এ বি এম মোস্তাফা কামাল পাশাও সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচন করবেন।

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সারিয়াকান্দি উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা এবং সোনাতলা ৭টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত বগুড়া-১ আসন। সারিয়াকান্দি উপজেলার ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৯১ হাজার ৭৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৯৪ হাজার ৬শ’ ৫জন ও মহিলা ৯৭হাজার ১শ’৮১জন। সোনাতলা উপজেলার ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৪১ হাজার ১২০ জনসহ এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ আট হাজার ৯০২ জন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ