আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে ভারতের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে বসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গুজরাট ও মুম্বাইয়ে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়টি এরইমধ্যে ‘অতি মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ে’পরিণত হয়ে পাকিস্তানের আরও কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পাকিস্তানের উপকূল থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ‘বিপর্যয়’।
সোমবার (১২ জুন) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এবং পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (১২ জুন) দুপুরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কিত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।
এর আগে গুজরাটের তিথাল সমুদ্র সৈকতে পর্যটক প্রবেশ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণ ও উত্তর উপকূল মাছ ধরার নৌকাগুলোকে আপাতত সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে কুচ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পশ্চিম উপকূলীয় রাজ্য গুজরাজের সৌরাষ্ট্র এবং কুচে ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এলাকা দুটির উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আগামী বুধবার পর্যন্ত সাগর উত্তাল থেকে থেকে অতি উত্তাল থাকতে পারে এবং বৃহস্পতিবার সাগর খুবই উত্তাল থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে,আগামী বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ভারতের গুজরাটের কুচ এবং পাকিস্তানের করাচিতে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানবে।
অন্যদিকে দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অতি মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হওয়া বিপর্যয় পাকিস্তানের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় উপকূলীয় শহর করাচিতে ব্যাপক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগ (পিএমডি) জানিয়েছে, বিপর্যয় করাচি থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এ পরিস্থিতিতে জনগণ যাতে উন্মুক্ত সমুদ্রে যেতে না পারে, সেজন্য সোমবার করাচির সিভিউ রোডটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দক্ষিণের জেষ্ঠ্য পুলিশ সুপার (এসিএসপি) সৈয়দ আসাদ রাজা সংবাদামাধ্যম ডনকে বলেছেন, এরই মধ্যে শের জংশনের আব্দুল সাত্তার এভিনিউ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে দোলমান ও ক্লিফটন থেকে সব গাড়িকে খাইবান -ই ইত্তেহাদ হয়ে সাবা এভিনিউ হয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পিএমডির জারি করা নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়টি ‘গত ১২ ঘণ্টায় আরও উত্তর দিকে সরে গেছে’ এবং এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত করাচি থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণে, থাটা থেকে ৫৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ওরমারা থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে।
এদিকে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, আগামী ১৪ জুন সকাল পর্যন্ত বিপর্যয় সম্ভবত আরও উত্তর দিকে সরতে থাকবে। তারপর এটি উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নেবে এবং আগামী ১৫ জুন দক্ষিণ-পূর্ব সিন্ধুর কেটি বন্দর এবং ভারতীয় গুজরাট উপকূলের ওপর দিয়ে ‘অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়’ হিসাবে অতিক্রম করবে।