মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে টানা তৃতীয় দিন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জাতীয়করণের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দিলে আগামী ১১ জুলাই থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে এ ঘোষণা দেয় বিটিএ।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। পরিতাপের বিষয় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ১,০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫% উৎসব ভাতা এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য।
বক্তরা বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে প্রদান করা হয়। তাছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদান না করার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।
তারা বলেন, শিক্ষক নেতৃবৃন্দ গত ঈদুল ফিতরে ১০০% উৎসব ভাতা প্রদান না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা আশাবাদী আসন্ন ঈদুল আজহার পূর্বে ১০০% উৎসব ভাতা প্রদান করেন।
বক্তারা বলেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক/কর্মচারী টাকা পাওয়ার পূর্বেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন। তাছাড়া কয়েক বছর ধরে কোনো প্রকার সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন করা হচ্ছে যা অত্যন্ত অমানবিক। তাই অতিরিক্ত ৪% কর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও করতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
এসব দাবি পূরণ না করা হলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পাসের পূর্বেই মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দিলে আগামী ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদের সঞ্চালনায় এবং অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন।