মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থানের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েই কথা বলেছেন এমন না। তিনি কথা বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের হয়ে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল বিশ্বের হয়ে। চীনের সরকারি সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমসকে তিনি এ কথা বলেছেন। ওই সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের ফেসবুক পেইজে প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে প্রশ্নোত্তর আকারে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিভাগের উপপরিচালক ওয়াং ওয়েনবিনের মন্তব্য প্রকাশ পেয়েছে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি যে, বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- র্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে তিনি ধাঁধার মতো দেখতে পেয়েছেন। আর নিষেধাজ্ঞা যেন একটা খেলার মতো। তিনি আরও বলেছেন, যেকোনো দেশের সরকারকে উৎখাতের ক্ষমতা তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) আছে। নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশ ভীত নয়। যেসব দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেবে তাদের কাছ থেকে কোনো কিছু কেনা বন্ধ করতে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে চীনের মন্তব্য কি? জবাবে ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যের বিষয়ে আমরা জানি। প্রকৃতপক্ষে নিজেদের বর্ণবাদী বৈষম্য, অস্ত্র নিয়ে সহিংসতা, মাদকের বিস্তার নিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট দেশ চোখ বন্ধ করে রাখে। তারাই আবার গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের কথা বলে বাংলাদেশ এবং অনেক উন্নয়নশীল দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে হস্তক্ষেপ করছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশি জনগণের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েই কথা বলেছেন এমন না। তিনি কথা বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের হয়ে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল বিশ্বের হয়ে। চীন এবং বাংলাদেশ ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা, আভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র বিষয়ক স্বাধীন নীতি সমুন্নত রাখতে বাংলাদেশকে আমরা দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। জাতীয় বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খায় এমন উন্নয়নের পথ অনুসরণে সমর্থন করি। সব রকম আধিপত্য এবং ক্ষমতার রাজনীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ও অন্য দেশগুলোকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত আমরা। একই সঙ্গে আমরা জাতিসংঘকেন্দ্রীক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা জোর দেয়া আন্তর্জাতিক শৃংখলা, জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতির ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণের মৌলিক নিয়ম এবং মানবজাতির জন্য একটি অভিন্ন ভবিষ্যত গড়ে তুলতে কাজ করবো।