গাজীপুরের আদাবৈ এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় ঝুট ব্যবসার দখল নিতে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় শনিবার রাতে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় মহানগর আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে গাজীপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ১৯ মামলার আসামি রাকিবুল ইসলাম শাহিন ওরফে ব্ল্যাক শাহীনকে একটি বিদেশি পিস্তল ও এক রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
রবিবার দুপুরে জিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (অপরাধ উত্তর) আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান এসব তথ্য জানান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সদর মেট্রো থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ওয়াজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে সদর মেট্রো থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. মহিউদ্দিন বিপ্লব (২৬), রাকিবুল ইসলাম শাহিন ওরফে ব্ল্যাক শাহিন (৩৪), সাকিবুল হাসান (২২), রাকিব উদ্দিন (১৮), মো. শাহজাহান (২৭), রায়হান মাহমুদ (২৭), মনির হোসেন (২৮), খায়রুল ইসলাম (২৭) ও হৃদয় হোসেন (১৮)।
উপ- কমিশনার (অপরাধ উত্তর) আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান বলেন, গাজীপুরে ঝুট ব্যবসার দখল নিয়ে অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় আহত শাহাদত হোসেনের মা কারিমুন বাদী হয়ে শনিবার একটি মামলা করেছেন। মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উপ-কমিশনার আরও জানায়, নগরীর আদাবৈ পেয়ারাবাগান এলাকায় নেক্সট এক্সপোর্ট জোন লিমিটেড নামের পোশাক তৈরির একটি কারখানা রয়েছে। ওই কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুট ব্যবসা করে আসছেন মোস্তফা কামাল নামের আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা। গত শুক্রবার দুপুরে ওই কারখানার ঝুট মালামাল বের করতে গেলে একদল যুবক তাদের বাধা দেন। ঝুট ব্যবসা দখলে নিতে তারা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন। আতঙ্ক ছড়াতে পরপর কয়েকটি গুলি ছোড়েন।
এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, নয়জন যুবক হাতে চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, দেশীয় অস্ত্রসহ দৌড়ে যাচ্ছেন ঝুট ব্যবসায়ী মোস্তফার বাড়ির দিকে। তাদের মধ্যে কয়েকজন ওই বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে মারছিলেন। এ সময় হামলাকারীরা বলছিলেন, ‘তোদেরকে মেরে ফেলবো।’ পরে বাড়ির ফটকের সামনে মোস্তফার স্ত্রী ফাতেমা ও শাহাদতকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। বাড়ির সামনে গুলির একটি খোসাও পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ঝুট ব্যবসায়ী মোস্তফা কামালের ছেলে ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পাশেই নেক্সট এক্সপোর্ট জোন লিমিটেড নামের কারখানা। কারখানা নির্মাণ করার সময় আমাদের সঙ্গে চুক্তি হয়, কারখানার ঝুট ব্যবসা আমার বাবা করবেন। সেই থেকেই ব্যবসাটি আমরা করে যাচ্ছি।
স্থানীয় কাজী শাহিন ওরফে ব্ল্যাক শাহিন ও বিপ্লব ব্যবসাটির দখল নিতে যাচ্ছিলেন উল্লেখ করে ইয়াছিন বলেন, ‘শাহিন ও বিপ্লবের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জন যুবক শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত আমাদের বাড়ির আশপাশে ওতপেতে থাকে। দুপুর ১২টার দিকে তারা আমাদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে তারা চায়নিজ কুড়াল, রামদাসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।