জায়গায় সংকুলান না হয় দুইজনের ব্রেঞ্চে বসতে হচ্ছে ছয় জন শিক্ষার্থীকে। শব্দের কারণে তারা মনোযোগ দিতে পারে না, একটি শ্রেণিকক্ষের মাঝখানে বেড়া দিয়ে করা হয়েছে দুটি শ্রেণীর কক্ষ। ছোট কক্ষে গাদাগাদি করে বসতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের বগুড়া জেলার শারিয়াকান্দি উপজেলার খোর্দবলাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি।
এক তলা বিদ্যালয়ের ভবনে কক্ষ মাত্র দুটি, একটি কক্ষে শিক্ষকরা দাপ্তরিক কাজ করছেন আরেকটি কক্ষে মাঝখানে বেড়া দিয়ে ছোট ছোট দুটি কক্ষ বানানো হয়েছে।
এছাড়াও স্লিপের টাকা দিয়ে দুটি টিনশেড ঘর করা হয়েছে, এর মাঝে বেড়া দিয়ে চারটি কক্ষ বানানো হয়েছে এসব কক্ষে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণীর পাঠদান করা হচ্ছে।
এছাড়া এক শ্রেণীর শব্দের কারণে অন্য শ্রেণীর ক্লাসের মনোযোগ দিতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা, এমন অবস্থায় বগুড়া জেলার শারিয়াকান্দি উপজেলার হার্ট শেরপুর ইউনিয়নের খোর্দবলাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে পাঠ্য দান। বছর বছর বাড়ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। বিদ্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে পাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণীতে ২৪৯ জন শিক্ষার্থী আছে। বিদ্যালয়ে এলাকাটি বড় হওয়ায় প্রতিবছর শিক্ষার্থীর ভর্তির সংখ্যা বেড়েই চলছে।
এতে পাঠদান করানো আরো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক আলমগীর হোসেন, বলেন শ্রেণীকক্ষ কম থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হয়। একশ্রেণীর পাঠদানের শব্দে আরেক শ্রেণীর পড়াশোনা বিঘ্নিত হয়, নতুন ভবন হলে শ্রেণীকক্ষ বৃদ্ধি পেলে এমন পরিস্থিতি থাকবে না। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ১৯৪২ সালে একটি টিনের ঘরের মাধ্যমে খোর্দবলাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয় । ১৯৯৩ সালের টিনের ঘরের জায়গায় চার কক্ষের একটি পাকা করা হয় ও সেখানেই চলছিল বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। সেটি জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় ২০১১ সালে পুরনো ভবনের পাশে দুই কক্ষের আরেকটি স্থাপনা তৈরি করা হয়।
২০২০ সালে পুরোনো স্থাপনা পরিত্যক্ত ঘোষণা করে এরপর থেকে নতুন স্থাপনায় দুটি শ্রেণি কক্ষ বানিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হয় । এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আকিবুর রহমান মিলটন জানান বিদ্যালয়টিতে কক্ষ সংকট হওয়ায় ক্লাস করাতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে এতে। শ্রেণিকক্ষ সহ বিদ্যালয়ের সব সংকট দেখিয়ে অভিভাবকেরা প্রতিনিয়ত অভিযোগ করে যাচ্ছেন। সাম্পত্তিক সরজমিন দেখা যায়, একটি শ্রেণীকক্ষের মাঝখানে পর্দা দিয়ে এক অংশে পাক প্রাথমিক ও অন্য অংশে পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস চলছে।
প্রতিটি শ্রেণীতে শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে বসে ক্লাস করছিল এক পাশের শব্দ অন্য পাশে থেকে শোনা যাচ্ছে। এমনকি এর পাশে শ্রেণী কক্ষের পড়ার শব্দ অন্য শ্রেণীর কক্ষে শিক্ষার্থীদের পড়ার মনোযোগে বিঘ্নিত হচ্ছে। এ অবস্থায় চলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা দান। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আকিবুর রহমান মিলটন বলেন , প্রতি বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেখা দিয়েছে শ্রেণীকক্ষের সংকট, এমন অবস্থায় পাঠ্দান কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হচ্ছে ।
তিনি বলেন অনেক বিদ্যালয়ের জায়গা কম শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কম তবুও বিল্ডিং হয়েছে। কিন্তু খোর্দবলাইল সরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১১ শতক জায়গা থাকার পরেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ার পরও বিল্ডিং নাই, বরাদ্দপাওয়া যায় না এটাই এলাকাবাসীর দুঃখে এবং কষ্টের । এলাকাবাসীর জোর দাবি কর্তৃপক্ষের কাছে অতি তাড়াতাড়ি যেন নতুন একটি ভবন তৈরি হয় ।