এক বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে মুখোমুখি লড়াই করছে রাশিয়া। ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে কখনো তারা এগিয়েছে আবার কখনও পিছিয়েছে। তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করার জন্য সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে বেসরকারি আধা-সামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ। কিন্তু শনিবার রাশিয়ার সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রুপটির বিদ্রোহের পর তাদের ভবিষ্যত কি, ইউক্রেনে তাদেরকে আবার দেখা যাবে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন জাগছে।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে আগেই বলা হয়েছিল যে, ইউক্রেনে যুদ্ধ করা রুশ বাহিনীর অন্তত দশ ভাগ ওয়াগনার সেনা। এছাড়া বাখমুতে যুদ্ধে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
তবে বিদ্রোহের পর ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় এসেছেন। তিনি রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে ফিরে যাবেন বলে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে চুক্তি করেছেন।
মনে করা হচ্ছে এই ঘটনার পর ইউক্রেনে আর ওয়াগনার বাহিনীকে দেখা যাবে না। তবে ইউক্রেন যুদ্ধে এর প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। ক্রেমলিনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন যে, ওয়াগনার গোষ্ঠীর বিদ্রোহ ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে প্রভাবিত করবে না।
সরকারের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন যে, ওয়াগনারের বিদ্রোহ কিয়েভের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে প্রভাবিত করবে না। এমন প্রশ্নই নেই এখানে।
ধারণা করা হয় যে, ইউক্রেনে ওয়াগনার বাহিনীর অন্তত ২০ হাজার সেনা যুদ্ধ করেছে। আক্রমণে অংশ নেওয়া ওয়াগনার সদস্যদের সাবেক সামরিক কর্মীর মর্যাদা দেয় রাশিয়া।
তবে ইউক্রেনে ওয়াগনারের বিষয়টি এখন অতিত। রাশিয়াও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে। ক্রেমলিনের দৃঢ়বার্তায় সেটিই স্পষ্ট হচ্ছে। শনিবার যখন ওয়াগনার বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনার দখল নেয় এবং মস্কোর দিকে যাত্রা করে। ঠিক তখনই কিয়েভে রুশ হামলা বেড়েছে।
রয়টার্স ও বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, শনিবার কিয়েভে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৩ জন নিহত ও ৮ জন আহত হয়েছেন।
কিয়েভ শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান সের্হি পোপকো জানান, এটা ছিল জুনে ইউক্রেনের রাজধানীতে অষ্টম রুশ হামলা। তিনি আরও জানান, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে ধ্বংসাবশেষ পড়ে গিয়ে কিয়েভের একটি ২৪ তলা ভবনের বেশ কয়েকটি তলায় আগুন ধরে যায়।
তিনি আরও জানান, আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিয়েভের আশেপাশের আকাশসীমায় ২০টিরও বেশি রুশ ক্ষেপণাস্ত্রকে ভূপতিত করেছে।
সুতরাং ওয়াগনার বাহিনীর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ও ইউক্রেন যুদ্ধে অভিযান অব্যহত রাখতে রাশিয়া যে প্রস্তুত সেটি প্রমাণ করেছে মস্কো। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ওয়াগনারের বিদ্রোহের ঘটনার পর রাশিয়াকে কটাক্ষ করে নিজেদের দখল হয়ে যাওয়া ভূমি মুক্ত করার দৃঢ় বার্তা দিয়েছেন।