উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা বেড়েছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ধরলা নদীর পানি। কিছুটা কমেছে তিস্তার পানি। এসব নদী এলাকায় এখন ভাঙন দেখা দিয়েছে।
গত দুই দিনে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার ফুলবাড়ী ও চিলমারীতে নতুন করে কয়েকটি জায়গায় ভাঙন দেখা গেছে।
ফুলবাড়ির নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমন্ডপ এলাকায় ধরলার স্রোতে বামতীরের বাঁধটি কিছুটা ভেঙে গেছে। বাকি অংশ ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া এই গ্রামের দুইশ পরিবার ইতিমধ্যে ভিটেমাটি হারিয়েছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে দুটি মাদ্রাসা, একটি মসজিদ ও নির্মাণাধীন একটি আশ্রয়কেন্দ্র।
অন্যদিকে চিলমারীর নয়ারহাটে ব্রহ্মপুত্রের স্রোতে বজরা দিয়ার খাতা এলাকায় ৮০টির মতো বসতভিটা ও আবাদি জমি ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে দক্ষিণ খাওরিয়ার চর, খেরুয়ার চর, উত্তর খাওরিয়ার চরের তিনশ বসতভিটা।
নাওডাঙা ইউনিয়নের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই গ্রামের বাঁধটির কিছু অংশ ভেঙে গেছে। পুরোপুরি ভাঙলে ৮-১০টি গ্রাম ধরলার পানিতে ডুবে যাবে।
নয়ারহাটের বজরার বাসিন্দা মাজেদুল হক বলেন, আমার এলাকার ৮০টি বসতভিটা ভেঙেছে। উলিপুরের বজরার দিকে জিও ব্যাগ ফেলেছে। এখানে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১১৭ সেন্টিমিটার, ধরলা সদর পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার, দুধকুমার পাটেশ্বরী পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ও তিস্তা কাউনিয়া পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৗশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, নদ-নদীর পানি বুধবার থেকে অল্প বেড়েছে। অধিকাংশ নদীর পানি স্থির রয়েছে। জেলার ২৫ কিলোমিটার বাঁধজুড়ে ২৬টি স্থান অতি ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার জায়গায় জরুরিভাবে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ চলছে। আমরা ভাঙনের জায়গাগুলো নজরদারিতে রাখছি। ভাঙন প্রতিরোধে পর্যাপ্ত মালামাল প্রস্তুত রয়েছে।