ওয়াগনারের সশস্ত্র বিদ্রোহের পর সিরিয়ায় থাকা গ্রুপটির সদস্যদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে সিরিয়া ও রাশিয়া। এ বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছয়টি সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত ২৩ জুন রাশিয়ার সামরিক নেতাদের উৎখাত করতে বিদ্রোহের ঘোষণা দেন ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। ঘোষণার পর পর দেশটির রাজধানী মস্কো অভিমুখে যাত্রাও করে ওয়াগনার বাহিনী। তবে ওই দিন রাতে লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ থেকে সরে আসেন প্রিগোজিন।
রয়টার্স বলছে, বিদ্রোহ ঘোষণার পর সিরিয়ায় থাকা ওয়াগনার গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ ভার নিজেদের হাতে নিতে বেশ কয়েক জন রুশ সেনা কমান্ডার সে দেশে যান। এ ছাড়া সিরিয়ার কেন্দ্রীয় প্রদেশ হোমসে মোতায়েন করা এক ডজন ওয়াগনার কর্তাকে তলব করা হয়। আর এটা করা হয় বিদ্রোহ শুরুর দিকেই।
ওয়াগনার যোদ্ধারা যেন নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে না পারে যে জন্য ২৩ জুন রাতে ল্যান্ডলাইন ও ইন্টারনেট সংযোগ কেটে দেয় সিরিয়ার গোয়েন্দারা। এদিন ওয়াগনার বাহিনীকে বিচ্ছিন্ন করে তাদের নিয়ন্ত্রণ নিতে নিবিড়ভাবে কাজ করেছে রাশিয়া ও সিরিয়া।
সূত্রের বরাতে রয়টার্স আরও জানায়, ওয়াগনার যোদ্ধাদের রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। চুক্তি না করলে তাদের অবিলম্বে সিরিয়া ত্যাগ করতে বলা হয়। যারা চুক্তি করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তাদের পরের দিন রাশিয়ান ইলিউশিন বিমানে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সহায়তায় ২০১৫ সালে দেশটিতে সেনা মোতায়েন করে রাশিয়া। এরপর থেকে রুশ সেনাদের সহায়তায় বিদ্রোহীদের টেক্কা দিয়ে আসছেন আসাদ। এ ছাড়া একই সময় থেকে দেশটিতে অবস্থান করছে ওয়াগনার যোদ্ধারা। তারা নিয়মিত সেনা অভিযানের পাশাপাশি সিরিয়ার তেল প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে।
ওয়াগনার বিদ্রোহ নিয়ে এখনো প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি সিরিয়া। তবে বিদ্রোহের ফলে দেশটিতে রুশ সেনাদের উপস্থিতি ব্যাহত হতে পারে—আড়ালে এমন আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছে দামেস্ক কর্তৃপক্ষ। যদিও সিরিয়ায় মাত্র ২৫০ থেকে ৪৫০ জনের মতো ওয়াগনার যোদ্ধা রয়েছে, যা রুশ বাহিনীর মাত্র ১০ শতাংশ।