ব্রিকসের নতুন সদস্য নেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য গঠনের চেষ্টায় নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে ভারত। জোটের পাঁচ সদস্যের মধ্যে এ সংক্রান্ত আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই।
গত মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয়েছে ব্রিকসের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও এতে অংশ নিয়েছেন চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের সরকারপ্রধানরা। জোটের আরেক সদস্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবারের সম্মেলনে সশরীরে যোগ দেননি।
সূত্রের বরাতে পিটিআই জানিয়েছে, সদস্যপদের মানদণ্ড এবং ব্রিকসের নতুন সদস্য নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য তৈরিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভারত। নয়াদিল্লির কৌশলগত অংশীদারদের ব্রিকসে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে এই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশটি।
ব্রিকসের এবারের সম্মেলনের অন্যতম প্রধান ইস্যুই হচ্ছে জোটের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি।
গত সোমবার ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বলেছিলেন, ব্রিকসে জোটে যোগ দিতে বিভিন্ন দেশ আগ্রহ দেখিয়েছে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত অন্তত ২৩টি দেশ ব্রিকসের সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছে। তবে এ বিষয়ে ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং আর্জেন্টিনা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
শক্তিশালী উদীয়মান বাজার হিসেবে পশ্চিমাদের বিকল্প বিবেচনা করা হয় চীন-রাশিয়ার ব্রিকস জোটকে। সেই জোটে যোগ দিতে গত বছরই আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছিল ইরান এবং আর্জেন্টিনা।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের শক্তিশালী হয়ে ওঠা বর্ণনা করতে গিয়ে ২০০১ সালে প্রথম ব্রিক (বিআরআইসি) শব্দটি ব্যবহার করেন গোল্ডম্যান স্যাশের অর্থনীতিবিদ জিম ও’নেইল। ২০০৯ সালে রাশিয়ায় নিজেদের প্রথম সম্মেলন করে দেশগুলো। ২০১০ সালে এতে যোগ দেয় দক্ষিণ আফ্রিকাও। তখন থেকে এই জোট ব্রিকস (বিআরআইসিএস) নামে পরিচিত হয়।
ব্রিকস দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনীতি চীনের। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাবে, জোটের ২৭ লাখ ৫০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতির ৭০ শতাংশের বেশিই চীনের দখলে। ভারতের ক্ষেত্রে এর হার ১৩ শতাংশ এবং রাশিয়া-ব্রাজিল উভয়ের সাত শতাংশ করে।
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ ব্রিকস দেশগুলোতে বসবাস করে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এ জোটের অংশ শতকরা ২৬ ভাগ।