রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনকে বহনকারী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এমন মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বাইডেন বলেন, আসলে কী ঘটেছে (বিমানটি কেন বিধ্বস্ত হয়েছে) তা আমি জানি না, তবে আমি বিস্মিত নই। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ায় খুব বেশি ঘটনা ঘটে না, যার পেছনে পুতিন নেই। যদিও আমি জানি না, আসলে সেখানে কী ঘটেছে।’
যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থার (এমআই৬) সাবেক প্রধান ক্রিস্টোফার স্টেলে বলছেন, প্রিগোজিনের এমন পরিণতি হওয়ারই ছিল। তার মতে, পুতিনের সম্মতিতেই নিরাপত্তা বাহিনীর উচ্চপদস্থরা এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
একইকথা বলছেন ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারাও। ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির এক উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোনিয়াক বলেন, প্রিগোজিন যখন মস্কোর ২০০ কিলোমিটার দূরে থাকতে অভ্যত্থান থামিয়ে দিয়েছেন, তখনই নিজের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দ্য ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডাব্লিউ) বলছে, এটা প্রায় নিশ্চিত যে, প্রিগোজিনকে বহন করা বিমান গুলি করে ভূপাতিতের নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন। তাদের মতে, পুতিন বুঝতে পেরেছেন ওয়াগনার সেনারা এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যেখানে তাদের কাছে প্রিগোজিনের প্রতি বিশ্বস্ততা বজায় রাখার থেকে নতুন ভাড়াটে বাহিনীতে যোগ দেওয়া এবং অর্থ বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তিনি প্রিগোজিনকে মেরে ফেলা নিরাপদ মনে করেছেন।
পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিগনি রাও রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল টিভিপি ইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যারা পুতিনের ক্ষমতাকে হুমকি দেয়, ‘তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয় না।’
প্রসঙ্গত, রুশ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দন্দে জড়িয়ে গত ২৩ জুন বিদ্রোহ করে বসেন ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের জন্য ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মস্কোর দিকে অভিযান শুরু করেন তিনি। পথে কয়েকটি শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন ওয়াগনারের যোদ্ধারা। পরে অবশ্য বেলারুশের মধ্যস্ততায় শেষ হয় সেই বিদ্রোহ। এর পর থেকে অনেকটা মিডিয়ার বাইরে ছিলেন। তবে সম্প্রতি একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশিত হয় প্রিগোজিনের। সেখানে তিনি ওয়াগনারে সেনা হিসেবে যোগ দিতে আহ্বান জানান। এর মাত্র দুদিন পর বিমান বিধ্বস্তে তার মৃত্যুর খবর আসলো গণমাধ্যমে।