বাসমতি চাল ব্যতীত সব ধরনের সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা পর এবার আতপ চালের ওপর অতিরিক্ত ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। আন্তর্জাতিক বাজারে মোট চালের ৪০ শতাংশেরও বেশি যোগানের দেশটির এ পদক্ষেপের কারণে বিশ্ববাজারে জোগানের অংশে আরও টান পড়বে।
শুক্রবার দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এই নির্দেশনায় বলা হয়, অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আতপ চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছে ভারত। বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশের এই পদক্ষেপের ফলে সারাবিশ্বে চাল সরবরাহ কমে যেতে পারে এবং চালের দাম আরও বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে যে দামে চাল বিক্রি হচ্ছে, তা গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ভারতে সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছিল আতপ চালের। আর তাতেই লাগাম টানতে আতপ চালেও এই অতিরিক্ত রপ্তানি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয় রপ্তানিকারকদের।
ভারত ২০২২ সালে বিশ্ববাজারে ৪০ শতাংশের বেশি চাল রপ্তানি করে। ওই বছর দেশটি চাল রপ্তানি করে প্রায় ৭৪ লাখ টন।
রপ্তানিকারকরা জানান, গত মাসে সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী সেদ্ধ চালের দাম ২৫ শতাংশের বেশি বেড়ে গিয়েছিলো। তবে গত কয়েকদিনে তা কিছুটা কমে আসলেও নতুন এই সিদ্ধান্তে আবারও বাড়বে চালের দাম।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিভিত্তিক একটি চাল রপ্তানি সংস্থার ডিলার বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সেদ্ধ চালের তুলনায় আতপ চালের দাম কম। গত মাসে সরকার সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর থেকে এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের ক্রেতাদের কাছে আতপ চালের চাহিদা বাড়ছিল।
তিনি আরও জানান, আতপ চালে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক জারির ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় আতপ চালের দাম এখন থাইল্যান্ড ও পাকিস্তানের চালের সমপর্যায়ে চলে যাবে। তাই বেশি দামে চাল কেনা ছাড়া ক্রেতাদের সামনে আপাতত আর কোনো বিকল্প নেই।
একদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে গমসহ অন্য শস্যের সরবরাহ কমেছে, অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভারতে চাল, গম ও আখের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। ফলে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে এসব পণ্যের দাম অনেক বেড়েছে।
আরও পড়ুন…পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ
নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়াটা আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। এ শঙ্কা থেকে দেশের বাজার স্থিতিশীল রাখতে উল্লিখিত পণ্যগুলোর রপ্তানিতে নানা ধরনের কড়াকড়ি আরোপ করছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার।