গাইবান্ধার নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে বিরাজ করছে ভাঙন আতঙ্ক। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় ফুলছড়ি পয়েন্টে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানির উচ্চতা বেড়ে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি কমে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি ৩৩ সেন্টিমিটার ও করতোয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ২৪০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার অন্যান্য নদ নদীর পানি কমলেও ফুসে উঠছে ব্রহ্মপুত্র। পানি বৃদ্ধির কারণে ফুলছড়ি উপজেলার গুনভড়ি, রতনপুর, সাঘাটার বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি চরের নিম্নাঞ্চলে আবারও পানি ঢুকতে শুরু করেছে। সাঘাটার মুন্সিরহাট, খলায়হারা, ফকিরপাড়া বেশকিছু এলাকার প্রায় শতাধিক বাড়ি, দোকান ও অসংখ্য গাছপালা নদীতে বিলীন হয়েছে। লোকালয়ে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রবেশ করেছে। এতে ওই এলাকার গ্রামীণ রাস্তা তলিয়ে গিয়ে চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়েছে হাজারো মানুষ। এদিকে আবার নতুন করে নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙন আতঙ্কে নদীতীরবর্তী মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক বছরের ভাঙনে এরই মধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে কয়েকশ ঘরবাড়ি, স্থাপনা ও গাছপালা। সে ক্ষত না শুকাতেই এবারও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন নদীতীরের বাসিন্দারা। সরেজমিনে জানা যায়, নদী ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে ফসলি জমি, বসতভিটা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা হামিদুল হক জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি শুরু হওয়ায় আমরা ব্রহ্মপুত্র পাড়ের মানুষ ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। ভাঙন শুরু হলে বাধের উপর গিয়ে আশ্রয় নেওয়া ছাড়া আমাদের কোন উপায় থাকবে না।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক জানান, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে উজানের ঢলে। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও তিস্তার পানি দুদিন থেকে কমতে শুরু করেছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়লেও তা ধীর গতিতে বাড়বে। তবে আজ কালের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে পারে।