জামালপুরে উজানের পাহাড়ি ঢলে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ইসলামপুর উপজেলার আট ইউনিয়নের প্রায় সাত হাজার পরিবার। যার ফলে শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছে বন্যাকবলিত পরিবারগুলোর।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার আব্দুল মান্নান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি পাঁচ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আরও দু-একদিন পানি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, পানিবৃদ্ধির ফলে পৌর এলাকার নিম্নাঞ্চল ও ইসলামপুর সদরের পশ্চিমাঞ্চলের নোয়ারপাড়া, সাপধরী, চিনাডুলী, বেলগাছা, কুলকান্দি, পাথর্শীসহ আটটি ইউনিয়নে বন্যায় পানি প্রবেশ করেছে। ফলে শাক-সবজি, বীজতলাসহ সদ্য রোপিত ১৫০০ হেক্টর রোপা আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় সাত হাজার পরিবার।
স্থানীয় রহিম, বরকত, সাবিনা, হাসেম আলী জানান, প্রতিবছরই এই এলাকায় পানি আসে। তারা এগুলো দেখতে দেখতে অভ্যস্ত। তবে এবার হঠাৎ করেই পানিবৃদ্ধি তাদের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে। টানা একসপ্তাহ পানি বৃদ্ধির ফলে তারা অনেকে রাস্তায়, উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের বিশুদ্ধ পানির সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গৃহপালিত গবাদি পশুর খাবার সংকট তাদের ভাবিয়ে তুলছে। এ বিষয়ে তারা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
চিনাডুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম বলেন, টানা সাতদিন ধরে বন্যার পানি বাড়ছে। আমার ইউনিয়নে প্রায় সাত হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে শুকনা খাবারসহ গোখাদ্যের অভাব। শুনছি পানি আরও কয়েকদিন বাড়তে পারে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু বলেন, গত এক সপ্তাহে আট ইউনিয়নে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ৭৩০ পরিবার। এখন পর্যন্ত ২৫ মেট্রিক টন ত্রাণের চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে, যা বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে। গো-খাদ্যের জন্য ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেই টাকা দিয়ে খাবারের প্যাকেট বন্যাকবলিত এলাকায় কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।