• শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
বিএসএফ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া দিলো সীমান্তে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে প্রতিদিন ২৫ লাখ ডিম উৎপাদনের লক্ষ্য প্রাণের স্বাস্থ্যের অবস্থা স্থিতিশীল ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে খালেদা জিয়ার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আনতে বন্ধ রাখা হয় ইত্যাদির শুটিং বঙ্গোপসাগরে দুইদিনে ধরাপরলো ১৯৫ মণ ইলিশ‌‌ যারা মাইনাস-টুর কথা বলে এটা তাদের মনগড়া: খসরু গণঅভ্যুত্থানে নিহত ছয়জনের মরদেহ পড়ে আছে ঢামেকের মর্গে গা‌ড়ির সি‌লিন্ডা‌র বি‌ষ্ফোর‌ণের আগু‌নে চারজ‌নের মৃত‌্যু নাসরিন আক্তার পরিচয় দেওয়ায় নিপুণ আটকে দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ তামিম প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের দিকে তেড়ে যাওয়ায় শাস্তি পাচ্ছেন

পেসারদের সাফল্য আড়াল করছে স্পিনারদের

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
মিরাজ, তাইজুলদের নিয়ে কাজ করছেন জাতীয় দলের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। ফাইল ছবি

এক সময়ের স্পিন-নির্ভর বোলিং আক্রমণ থেকে বদলে বাংলাদেশ এখন পেস বোলিংয়ের শক্তি দেখাচ্ছে। তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদরা আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে ম্যাচ জেতাচ্ছেন। এই সাফল্যের গল্পের উল্টোপিঠে কিছুটা ব্যর্থতার গল্পও আছে। যে স্পিন বোলিং ছিল এক সময়ের শক্তি, এখন সেই স্পিনাররাই ভুগছেন উইকেট খরায়।

এশিয়া কাপে ৯ উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকেট শিকারির তালিকায় থাকা প্রথম চারজনের দুজন বামহাতি স্পিনার; কুলদীপ যাদব আর দুনিথ ভেল্লালাগে সবশেষ ম্যাচে দুজনের স্পিন ভেলকি জমে উঠেছিল প্রেমাদাসার ২২ গজে। অথচ বাংলাদেশের স্পিনাররা এই এশিয়া কাপে মোট উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৪টি। তাই প্রশ্ন উঠছে, পেসারদের সাফল্যের আড়ালে কি মুখ লুকাচ্ছেন স্পিনাররা?

প্রথমত অবশ্য বলতেই হয়, স্পিনারদের ব্যর্থতার পেছনে ব্যাটসম্যানদের দায়টা কম নয়। এখন পর্যন্ত এশিয়া কাপে খেলা ৪ ম্যাচে দুটোতে আগে ব্যাট করে দুইশোর নিচে অলআউট হয় বাংলাদেশ। স্পিনারদের তাই বল করবার বা প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলবার সুযোগটাই অনেক কমে আসে। যদিও ভালো করার সুযোগ ছিল সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে। কলম্বোতে সেই ম্যাচে উইকেট সব পেসারদের, ৩ স্পিনার ২৩ ওভার বল করে উইকেট পাননি। রান তাড়ায় নেমে শ্রীলঙ্কার স্পিনারদের ঠিকই উইকেট দিয়েছে বাংলাদেশ, সেই মহেশ থিকশানা আবারও সফল বাংলাদেশের বিপক্ষে।

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সবশেষ ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে আগামীকাল। আজ একই মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান, কার্যত সেমিফাইনালে রূপ নেওয়া ম্যাচজয়ী দলই খেলবে ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে। আর রোহিত শর্মাদের জন্য শেষ ম্যাচটা নিয়মরক্ষার। নিজেদের সবশেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে স্পিনে সবকয়টি উইকেট হারিয়েছে ভারত। স্পিন খেলায় যাদের এত দক্ষতা, তারা কিনা স্পিনে এভাবে কুপোকাত?

কী এমন করেছিলেন ভেল্লালাগে? বাংলাদেশ দলের খণ্ডকালীন স্পিন বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করা সোহেল ইসলাম মনে করেন, প্রেমাদাসার পিচের জোরেই এই সাফল্য, ‘আসলে ভেল্লালাগে কিছুই করেনি। ও উইকেট অনুযায়ী বোলিং করেছে। আসালাঙ্কাও তো ৪ উইকেট পেয়েছে। আসালাঙ্কাকে কি নিয়মিত বোলিং দেয় শ্রীলঙ্কা, ও হলো ঘরোয়া ক্রিকেটে বোলিং করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কি খুব বেশি বোলিং করেছে?’

টানা তিনদিন খেলা হওয়া, বৃষ্টি সব মিলিয়েই উইকেটের এমন অবস্থা যেটা ভেল্লালাগে আর আসালাঙ্কার বোলিংকে ভারতের মতো দলের সামনেও দুর্বোধ্য করে তুলেছিল বলে মনে করেন সোহেল।

আজ একই ভেন্যুতে লড়বে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা। উইকেটের ফায়দাটা কি পরদিন ভারতের বিপক্ষে নিতে পারবে বাংলাদেশ? সোহেল মনে করেন, ‘দেখতে হবে উইকেট কেমন হয়। অনেক সময় উইকেট বোলারদের বোলিংয়ের সঙ্গে সহায়ক হলে তার বল খেলা কঠিন হয়। লাহোরের উইকেট যেমন স্পিনারদের একদমই সহায়তা করেনি, ব্যাটিং সহায়ক ছিল। ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে রিস্ট স্পিনাররা বেশি সহযোগিতা পেয়েছে। বাংলাদেশের জন্য সহায়ক হলে সেটা ভারতের জন্যও সহায়ক হতে পারে (শেষ ম্যাচের উইকেট)।’

এই আশঙ্কা তো থাকছেই। কুলদীপ, রবীন্দ্র জাদেজা আর অক্ষর প্যাটেল- এই তিনের বাম হাতের ঘূর্ণিতেই বিপদ হতে পারে বাংলাদেশের।

ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ২০ উইকেটের ভেতর স্পিনাররাই পেয়েছেন ১৬ উইকেট। ভারতের তো ১০ উইকেটই পড়েছে স্পিনারদের বলে। শ্রীলঙ্কার ৬ উইকেট ভাগ করেছেন কুলদীপ আর জাদেজা। বাংলাদেশ দলেও আছেন ২ বামহাতি, সাকিব আর নাসুম। যদিও নাসুম এখন পর্যন্ত একটাই ম্যাচ খেলেছেন এশিয়া কাপে, শেষ পর্যন্ত দলীয় সমন্বয়ে তিনি থাকেন কি না তা এখনই আন্দাজ করা মুশকিল।

তবে বল হাতে সাকিবের সময়টা ভালো যাচ্ছে না। এই বামহাতি অর্থডক্স বোলার পাল্লেকেলেতে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচের পর থেকে উইকেটশূন্য। চলতি বছরে সাকিব ১৫ ম্যাচ খেলে ১২ ইনিংসে বল করেছেন ১০১.৩ ওভার। তাতে ৪৪৪ রান খরচায় সাকিবের শিকার ১৩ উইকেট। ১৪ ম্যাচে ১২ ইনিংসে মেহেদি হাসান মিরাজের শিকার ১১ উইকেট। চলতি বছর কোনো ম্যাচেই ২ উইকেটের বেশি পাননি মিরাজ।

স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে মিরাজের সঙ্গেই বেশি কাজ করেছেন সোহেল। রংপুর রাইডার্সের কোচ হিসেবে সামনের মৌসুমে বিপিএল দলে পাবেন সাকিবকেও। দুজনের কারো বোলিং পরিসংখ্যানই তাকে খুব একটা চিন্তাগ্রস্থ করতে পারছে না, ‘আমাদের স্পিনাররা ঠিক পথেই আছে। ওদের দল থেকে যে ভূমিকাটা দেওয়া হয়েছে তারা সেটা ঠিকভাবে পালন করছে। ওদের মাঝের ওভারগুলোতে বল করতে হয়। রান আটকাতে হয়। আগে ছিল যে স্পিনাররা উইকেট নেবে, কিন্তু এখন দলে তাদের ভূমিকা বদলে গেছে।’

ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপেও মোটা দাগে স্পিনারদের ভূমিকা এরকমই থাকবে বলে মনে করেন সোহেল, ‘অক্টোবর-নভেম্বরে অনেক জায়গায় শীতের আমেজ থাকবে, রাতে শিশির পড়বে। আইসিসির ইভেন্টে উইকেট ব্যাটসম্যান সহায়কই হবে। কিছু কিছু ভেন্যু যেমন দিল্লি, চেন্নাইতে স্পিনাররা হয়তো বাড়তি সুবিধা পাবে।’

তিন বামহাতি স্পিনারের বোলিং আক্রমণ ছিল একটা সময় বাংলাদেশের ছক। পেসাররা ছিলেন আড়ালে। সেখান থেকে তিন পেসারের নিয়মিত একাদশে উপস্থিতি বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের চেহারাটা পালটে দিলেও ভারসাম্য আসেনি। এখন উলটো হয়ে গেছে ছবিটা, এখন পেসারদের আড়ালে লুকাচ্ছেন স্পিনাররাই। সাকিব, মিরাজ যতটা না বিশেষজ্ঞ স্পিনার, তার চেয়ে তো এখন বেশি অলরাউন্ডার।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ