মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনকে দুই বছরের কারাদণ্ডের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। একইসঙ্গে তথ্য প্রযুক্তি আইনকে কালো আইন উল্লেখ করে অনতিবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেছে দলটি।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মিডিয়া ও প্রচার সমন্বয়ক সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল গতকাল ১৪ সেপ্টেম্বর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের কুখ্যাত ৫৭ ধারার মামলায় মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়ে তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছে। কুখ্যাত ধারায় কাউকে শাস্তি দেওয়া কোনো ভাবেই ন্যায়সঙ্গত নয়। এভাবে কুখ্যাত ৫৭ ধারা ব্যবহার করে একটা মানবাধিকার সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বকে হয়রানি ও আইনি জুলুমের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
এতে আরও বলা হয়, অধিকার প্রায় তিন দশক ধরে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর গুম-খুন-ক্রসফায়ারের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো নথিভুক্ত ও প্রকাশের ব্যবস্থা করছে। সরকারের ইচ্ছাপূরণের আদালতের এ সিদ্ধান্ত আবারও প্রমাণ করে, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অপরিহার্য উপাদান জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে সক্রিয় পক্ষগুলোর কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করতে এবং অস্তিত্ব বিলীন করতে সরকার ভীষণ তৎপর।
রাজনৈতিক জুলুম বন্ধের আহ্বান জানিয়ে এতে বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত না করে সেগুলোর তথ্য প্রকাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে সরকার দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার সাথে বেঈমানী করেছে। এর মাধ্যমে বহির্বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের সুনাম কলঙ্কিত করছে। অধিকারের নেতৃত্বকে এইভাবে বিচারিক জুলুমের প্রক্রিয়াটি মানবাধিকার-রক্ষক ও সরকার সমালোচকদের ওপর সরকারের রাজনৈতিক জুলুমের অংশ বলে মনে করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
সরকারের বিরুদ্ধে সকল বিরোধী পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন বাংলাদেশের সকল মানবিক ও গণতান্ত্রিক মানুষের প্রতি সরকারের এইরকম ‘এবসিলিউট পাওয়ার’ এর নগ্ন আক্রমণের বিরুদ্ধে নিজেদের জীবন-জীবিকা-মর্যাদা-স্বাধীনতা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানায়। ঐক্যবদ্ধভাবে এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে অপসারণ এবং শাসনতান্ত্রিক ক্ষমতাকাঠামো সংস্কারের মাধ্যমে একটি এবসিলিউট জবাবদিহিতামূলক মানবিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায়।