গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কাপড়সহ মূল্যবান মালামাল চুরির ঘটনায় জড়িত আসামি এস.এম আসাউলকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গাজীপুরের স্টিচারস মেটিক্স লিমিটেড নামক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কাপড়সহ মূল্যবান মালামাল চুরির ঘটনায় জড়িত আসামি এস.এম আসাউলকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গত রোববার রাতে টংগী পূর্ব থানাধীন বিসিক এলাকা হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পিবিআই জানায়, গ্রেপ্তার আসাউল পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। আগে বিভিন্ন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে ইলেকট্রিশিয়ান পদে চাকরি করতেন। ২০২১ সালে স্টিচারস মেটিক্স লিমিটেড ফ্যাক্টরিতে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হিসেবে মাসিক ২৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরিতে যোগদান করেন। কিন্তু মহামারী করোনা চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে ফ্যাক্টরি বন্ধ থাকায় যথা সময়ে বেতন পরিশোধ করতে না পারায় আসাউল তার সহযোগীদের নিয়ে বেতনের পরিবর্তে ফ্যাক্টরির মালামাল চুরির করার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর ফ্যাক্টরি ছুটির পর রাতে আসাউল তার সহযোগীদের নিয়ে একটি কাভার্ড পিকআপ অফিসের পিছনে এনে অফিসের পকেটে গেইটের তালা ভেঙ্গে ফ্যাক্টরির ভিতরে প্রবেশ করে মূল্যবান কাপড়সহ অন্যান্য মালামাল কাভার্ড পিকআপে ভর্তি করে নিয়ে যান। পরে তারা চোরাইকৃত মালামাল অন্যত্র বিক্রি করে প্রাপ্ত টাকা ভাগ ভাটোয়ারা করে পালিয়ে যান।
পিবিআই আরও জানায়, ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে কারখানার জেনারেল ম্যানেজার মো. আক্তারুল ইসলাম ছুটি শেষে নিজ বাসায় চলে যান। পরদিন সকালে ফ্যাক্টরিতে প্রবেশ করে দেখতে পান যে, ফ্যাক্টরির পিছনের পকেট গেটের তালা ভাঙ্গা।
ফ্যাক্টরির মালামালের খোঁজ করে জানতে পারেন যে, ফ্যাক্টরির নিচ তলায় কাটিং সেকশনে থাকা ৭লাখ ৫২ হাজার ৪০০ টাকা মূল্যের ১ হাজার ২৫৪ কেজি ফিনিস ফেব্রিক্স, ৫০ হাজার টাকা মূল্যের সুয়িং মেশিন, বয়লার মেশিন পার্টস ও ইলেক্সট্রিক্স টুলস্ ফ্যাক্টরিতে নেই।
ফ্যাক্টরীতে কর্তব্যরত সিকিউরিটি গার্ড ছুটিতে থাকায় ঘটনার দিন রাতে সিকিউরিটি গার্ডের দায়িত্বে কেউ ছিলেন না। পরে তিনি কোম্পানির সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখতে পান, ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ফ্যাক্টরির সামনে একটি অজ্ঞাতনামা নীল রং এর কাভার্ড পিকআপ গাড়ি নিয়ে আসে। তারা ফ্যাক্টরির পিছনের দিক থেকে মালামাল কাভার্ড পিকআপে লোড করে রাত পৌনে ১২টার দিকে চলে যায়। এই ঘটনায় কারখানার জেনারেল ম্যানেজার আক্তারুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে গাজীপুরের গাছা থানায় মামলা করেন।
থানা পুলিশ ২০২১ সালের ১৪ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলাটি তদন্ত করেন। থানা পুলিশের তদন্তে মামলার রহস্য উদঘাটিত না হওয়ায় তদন্ত শেষে গাছা থানার চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করলে আদালত স্ব-প্রণোদিত হয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই গাজীপুর জেলাকে নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশে এসআই মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পিবিআই গাজীপুরের একটি দল গত রোববার মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেন।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, এটি একটি চুরির ঘটনা। থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। আদালত পিবিআই গাজীপুর জেলা অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিলে পিবিআই গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহসহ সকল তথ্য প্রমাণ বিচার বিশ্লেষণ করে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে করে একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়ে আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।