রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের বিজি প্রেস এলাকায় গুলি ও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মামুন নামে একজনকে আহত করা হয়েছে। এ সময় ভুবন চন্দ্র শীল (৫৫) ও আরিফুল হক ইমন (৩০) নামে আরও দুই পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, সোমবার রাতে মগবাজার এলাকার প্রেয়সী বার থেকে বের হয়ে মামুন (৫৪), খোকন (৩৭) ও মিঠু (৫২) নামে তিন ব্যাক্তি প্রাইভেটকারে করে মামুনের তল্লাবাগের বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার সিটি পেট্রলপাম্প ও বিজি প্রেসের মাঝামাঝি প্রধান সড়কে পৌঁছালে চারটি মোটরসাইকেলে করে সাত থেকে আটজন সন্ত্রাসী প্রাইভেটকার থামিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করেন। এতে মামুনসহ অন্যরা তাৎক্ষণিক প্রাইভেটকার থেকে নেমে পড়লে মোটরসাইকেলে থাকা ব্যক্তিরা মামুনের পিঠে ও ঘাড়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন।
ওসি জানান, মামুন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। তিনি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শমসেরাবাদ গ্রামের এস এম ইকবালের ছেলে। মামুন প্রায় ২৬ বছর জেল খেটে কয়েক মাস আগে জামিনে বেরিয়েছেন। তাঁর দুই সহযোগীকে নিয়ে প্রাইভেট কারে যাওয়ার সময় অন্য সন্ত্রাসী গ্রুপ তাঁদের ওপর হামলা করে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা করেনি কোনো পক্ষ, তবে এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
পুলিশ জানায়, গুলিবিদ্ধ দুই পথচারীর মধ্যে ভুবন চন্দ্র শীলের মাথার পেছনে গুলি লেগেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় রাতেই তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহত ভুবন চন্দ্র শীলের বড় ভাইয়ের স্ত্রী জয়শ্রী রানী জানান, ভুবনের বাড়ি নোয়াখালীর সদর উপজেলায়। বর্তমানে মতিঝিলের আরামবাগে একটি মেসে থাকেন তিনি। তাঁর পরিবার গ্রামের বাড়িতে থাকেন। রাতে পুলিশের মাধ্যমে তাঁরা খবর পান, ভুবন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে ভুবনকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান। তখন তাঁকে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
ভুবনকে উদ্ধারকারী মোটরসাইকেল চালক শামীম বলেন, আনুমানিক রাত সাড়ে নয়টার দিকে শেওড়া থেকে ভাড়ায় আরামবাগ ক্লাবের দিকে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল বিজি প্রেসের বিপরীত দিকের সড়কে হঠাৎ দুটি বিকট শব্দ হয়, এরপর দেখি আমার মোটরসাইকেলে থাকা ভুবন হেলে পড়েছেন। মাথা ধরে সোজা করে দেখি রক্ত ঝাড়ছে। পরে দেখতে পাই তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন। সেখান থেকে তাকে অন্য একটি গাড়িতে করে দ্রুত সমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যাই।
তিনি আরও বলেন, পরে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সাহিদুল ইসলাম সহ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় এবং আহতের মোবাইলের মাধ্যমে তার লোকজনকে সংবাদ দেওয়া হয়। পরে জানা যায়, তিনি একজন আইনজীবী, গোমতী টেক্সটাইল লিমিটেডের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার।
এদিকে ঘটনার পর থেকে তেজগাঁও বিভাগের পুলিশের কয়েকটি ইউনিট বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে। এছাড়া ডিবি পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কাজ করছে।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আশপাশের সব সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তবে মোটরসাইকেল আসা কোনো গাড়ির নম্বর বোঝা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।