তিন-চার বছর আগে ইলিশ মাছ সস্তা ছিল। অনেক বড় এবং ভালো ইলিশ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি ছিল। কিন্তু এখন এক কেজির ইলিশ ১৫শ-১৮শ টাকা। তাই এখন গরীব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের পক্ষে এই ইলিশ কিনে খাওয়া সম্ভব না। এখন তারা অর্ধ কাটা, পচা মাছ বেশি কিনছে সাধারণ মানুষ আর ভালো মাছ কিনতে পারে না এমনটাই বলছিলেন, পটুয়াখালীর আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পাশে খুচরা মৎস্য ব্যবসায়ী মো. জুয়েল রানা।
শুধু জুয়েল না আলীপুর বাজারের শেখ রাসেল সেতুর নিচে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পরে খুচরা মৎস্য ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ সাধারণ মানুষই ইলিশ কিনতে আসেন বাজারে তবে উচ্চবিত্তরা অল্প কিছু ভালো ইলিশ কিনতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্রেতা গরীব ও মধ্যবিত্ত হওয়ায় তাদের ভরসা বিভিন্ন মাছে খাওয়া, জালে আটকে লেজ, মাথা, শরীরের একাংশ কাটা ইলিশ।
মৎস্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা চলাকালে ইলিশ কেনার ইচ্ছা নিয়ে দেলোয়ার নামের একজন ক্রেতা ওই কাটা ইলিশের দাম করছিলেন। তিনি বলেন, আমি কুয়াকাটা সৈকতের একজন ফটোগ্রাফার। আমি ইলিশ কিনতে বাজারে এসেছি কিন্তু এসে দেখি ভালো ইলিশের অনেক দাম। যা আমার পক্ষে কেনা সম্ভব না, তাই আমি কাটা ইলিশের দাম জিজ্ঞেস করছি। ছোট-বড় মিলানো কাটা এক কেজি ইলিশ চাচ্ছে আমার কাছে ৩৫০ টাকা। এখন দেখছি কাটা ইলিশ কেনাও অসম্ভব হয়ে পড়ছে। দেখি যদি আরেকটু কমে পাই তাহলে এক কেজি কাটা ইলিশ নিয়ে বাড়িতে যাব।
নাম না বলা শর্তে আরো এক ক্রেতার সাথে কথা বললে তনি বলেন ‘প্রতিবছরই সন্তানদের জন্য কমবেশি ইলিশ কিনি। কিন্তু এখন আর ইলিশ কেনার মত সম্বল আমার নেই। আমি একজন মধ্যবিত্ত তাই এই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে টিকে থাকা আমার জন্য অনেক বড় কষ্টের। আজকে রাতে কিনতে এসেছি যাতে কাটা ইলিশ নিয়ে হলেও ইলিশের স্বাদটা নিতে পারি।
ওই বাজারে আব্দুল্লাহ নামের এক মাছ বিক্রেতা বলেন, সমুদ্র থেকে যখন জেলেরা মাছ নিয়ে ফিরে। তখন তাদের মাছের মধ্যেও অনেক মাছ আসে মাথা, লেজ এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ কাটা। এগুলো এক সময়ে জেলেরা নিয়ে আসতো না কিন্তু এখন এগুলোর অনেক চাহিদা। তাই এই মাছগুলো জেলেরা নিয়ে আসলে আমরা অর্ধেক দামে কিনে নিয়ে আসি। পরে মাছগুলোকে আমরা সাইজ অনুযায়ী দুইশো থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত কেজি ধরে বিক্রি করি। যে কারণে অনেক গরিব মানুষ এবং মধ্যবিত্তরা ইলিশের স্বাদটা নিতে পারে। তুলনামূলক এখন ভালো মাছের চেয়ে এই অর্ধ-কাটা মাছগুলোই বেশি চলে।