১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে সারাদেশে সপ্তাহব্যাপী মানববন্ধন ও সমাবেশ শুরু হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ প্রতিষ্ঠাব্রতী সংগঠন ‘আমরা একাত্তরের’ উদ্যোগে সংগঠনের চেয়ারপারসন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। গতকাল ময়মনসিংহ, যশোর, দিনাজপুর, নেত্রকোনা ও কুমিল্লা জেলায় সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী সাত দিন দেশের অন্যান্য জেলায়ও একইভাবে এ কর্মসূচি পালিত হবে।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে ‘আমরা একাত্তর’ এর প্রধান সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা হিলাল ফয়েজী বাংলাদেশে পাকিস্তান বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার (জেনোসাইড) জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়রে দাবিতে সারাবিশ্বে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জেনোসাইডের জাতিসংঘ স্বীকৃতি আদায়ের দাবিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার রাজনীতিক, জেনোসাইড বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীদের সমাবেশ, প্রদর্শনী, সেমিনার ও আলোচনার সভার আয়োজন করছে। জাতিসংঘ স্বীকৃতির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট নারী নেত্রী দিল আফরোজ দিলু, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা সমীরণ সরকার, আমরা একাত্তরের কেন্দ্রিয় সমন্বয়ক এনামুল আজিজ রুমি, প্রকৌশলী উত্তম কুমার দাশ, সাংবাদিক মাহফুজা জেসমিন ও সাংবাদিক রাকিবুল আলম রুশো, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কানিজ গোফরানি কোরায়শি, বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী মঞ্জুয়ারা রশীদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ডানা নাজলি প্রমুখ।
মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত জেনোসাইডের জাতিসংঘ স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে বাংলাদেশের শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র, কৃষক ও সাধারণ নিরীহ মানুষসহ নারী ও শিশুদের ওপর যে বর্বরোচিত নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে, তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২ বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘ আজও একে জেনোসাইড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। বক্তারা এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশে-বিদেশে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।