কম-বেশি সবাই পেঁপে খেতে পছন্দ করেন। প্রায় বছরজুড়েই বাজারে সহজেই পাওয়া যায় এই ফল। কখনো সবজি হিসেবে তরকারিতে, আবার কখনো পেকে গেলে ফল হিসেবে খাওয়া হয়। মূলত উপকারিতা রয়েছে বলেই খাওয়া হয় এই পেঁপে। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার ফলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়।
পেঁপে উপকারী ফল হলেও এ নিয়ে অনেক সময় বিতর্ক শুরু হয় আড্ডা কিংবা বন্ধু মহলে। সবারই প্রশ্ন থাকে, কাঁচা পেঁপে, না পাকা পেঁপের উপকারিতা বেশি। এ নিয়ে অবশ্য সবাই নিজ নিজ যুক্তিও দিয়ে থাকেন। কিন্তু তাতে কি এই বিতর্কের ইতি টানে?
এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদ বলেছেন, সেখানে পেঁপের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত কথা । এবার তাহলে সেসব জেনে নেয়া যাক।
ওষধিগুণে ভরপুর কাঁচা পেঁপে : এ পুষ্টিবিদের কথায়, সাধারণত আমরা কাঁচা পেঁপে রান্না করে কিংবা সিদ্ধ করে খাই। কাঁচা পেঁপে যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন, এর গুণের কমতি নেই তাতে। কাঁচা পেঁপেতে প্যাপাইন নামক উৎসেচক রয়েছে। যা কিনা চিকেন, মাটনের মতো জটিল প্রোটিন হজমে সহায়তা করে। এছাড়া নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেলে গ্যাস ও বদহজমের সমস্যাও কমবে। এমনকী আইবিএস-এর সমস্যাও এড়িয়ে চলা সম্ভব।
পাকা পেঁপের গুণাগুণ : পাকা পেঁপে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ। এতে প্রাকৃতিক উপাদান গলাধঃকরণ করলে ইমিউনিটি যে চাঙ্গা হবে, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। পাকা পেঁপেতে পর্সেটিন নামক পলিফেনল নামক উপাদান রয়েছে। যা প্রদাহ হ্রাসে কাজ করে। এছাড়া এতে থাকা অন্যান্য উপকারী উপাদান শরীরে এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রাও বৃদ্ধি করতে পারে। তাই নিয়মিত পাকা পেঁপে খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি এড়িয়ে চলা সম্ভব।
কোন পেঁপে বেশি উপকারী : পুষ্টিবিদ ঈশানী বলেন, সাধারণত আমরা ফল হিসেবে পাকা পেঁপে খাই। আর কাঁচা পেঁপে সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। কাঁচা ও পাকা, দুটির গুণই আলাদা। তাই গুণের দিক থেকে কোনোটিকে এগিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তবে সুস্থ থাকার জন্য দুই ধরনের পেঁপেই খেতে পারেন। এতে নানা রোগের ঝুঁকি কমবে।
ডায়াবেটিস রোগীরা কি পাঁকা পেঁপে খাবে : অনেক ডায়াবেটিস রোগীই পাকা পেঁপে খেতে ভয় পান। তারা মনে করেন, এ পেঁপে খেলে সুগার হয়তো বেড়ে যাবে। কিন্তু ধারণাটি আংশিক ভুল। পাকা পেঁপেতে খুব একটা ফ্রুকটোজ থাকে না। এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীরা অনায়াসে পাকা পেঁপে খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। এতে খনিজ ও ভিটামিনের ঘাটতি মিটবে। তবে দিনে ১০০ গ্রামের বেশি পাকা পেঁপে খাওয়া যাবে না।
খাওয়ার পর ফল নয় : ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চের পরপরই ফল খেলে শরীরে সুগার লোড বৃদ্ধি পায়। এই সময় ফল খেলে এর পুষ্টিগুণও পাওয়া যায় না। এ জন্য ভরপেট খাবার খাওয়ার ২-৩ ঘণ্টা পর ফল খান। তাতে উপকার বেশি পাবেন।