• শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন

ইসরায়েলে হামলার প্রস্তুতি ইরানের, যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হিজবুল্লাহ,যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্কতা

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৪

ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি বা আমেরিকান সম্পদ লক্ষ্য করে হামলার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। এরইমধ্যে ইসরায়েলে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে ইরান। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রকে তারা সরে যেতে বলেছে।

গাজা যুদ্ধ, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কন্স্যুলেটে হামলার পর এবার চিরশত্রু ইরান ও ইসরায়েল মুখোমুখি। কন্স্যুলেটে হামলায় ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা জাহেদি ও অন্য সদস্যদের হত্যার বদলা নিতে ইসরায়েলে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে ইরান। এ আশঙ্কায় ইসরায়েলে নতুন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সেখানে নতুন এক যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে।

বাতিল করা হয়েছে প্রতিরক্ষা বিভাগের যোদ্ধা (কমব্যাট) ইউনিটগুলোর সব রকম ছুটি। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জিপিএস। এক কথায় ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। কারণ, এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে তা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে পারবে না কেউ।
এরই মধ্যে সিএনএন রিপোর্ট করেছে, যুক্তরাষ্ট্রও ওই এলাকায় উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অথবা ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো টার্গেটে যদি ইরান হামলা চালায় তাহলে তার উল্লেখযোগ্য জবাব দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইরান তাদের যে বার্তা দিয়েছে সে বিষয়ে মন্তব্য করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

ইরান বলেছে, সিরিয়ায় কন্স্যুলেটে হামলায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত তারা। অন্যদিকে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলকে যুদ্ধে প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক যোদ্ধাগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।

চিঠি লিখে ওয়াশিংটনকে সতর্ক করেছে ইরান। ইরানের প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক বিষয়ক ডেপুটি চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ জামশিদি এক্সে লিখেছেন, নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে টেনে নিচ্ছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেন সতর্ক থাকে।

তিনি লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে এ অবস্থান থেকে সরে যাওয়া, যাতে তারা আঘাতপ্রাপ্ত না হয়। জামশিদি আরও বলেন, এর জবাবে মার্কিন টার্গেটে হামলা না করতে ইরানের প্রতি অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

অজ্ঞাত দু’জন মার্কিন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে এনবিসি বলেছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন উদ্বিগ্ন এ নিয়ে যে- যে কোনো হামলা হতে পারে ইসরায়েলের ভিতরে। বিশেষ করে বেসামরিক এলাকা বা লোকজনকে বাদ দিয়ে এই হামলা হতে পারে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী অথবা গোয়েন্দা টার্গেটে। ওদিকে ইরানের সঙ্গে অস্বাভাবিকভাবে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করেছে বাইডেন প্রশাসন। তারা জানানোর চেষ্টা করেছে যে, সোমবার দামেস্কে ইরানের কন্স্যুলেটে যে হামলা হয়েছে সে বিষয়ে অবহিত ছিল না যুক্তরাষ্ট্র। এ থেকে এটাই বোঝা যায় যে, মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের বাহিনী এবং ঘাঁটিগুলোকে রক্ষার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইরান কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা ইসরায়েলের মুখে চপেটাঘাত করবেই। কিন্তু এখনও পরিষ্কার নয় যে, আসলে কি ঘটবে অথবা ইসরায়েলে সরাসরি কোনো হামলা করবে কিনা ইরান। ওই হামলার পর সতর্ক অবস্থায় আছে ইসরায়েল। তাদের যোদ্ধা সেনাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। রিজার্ভ ফোর্সকে তলব করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে আকাশ প্রতিরক্ষা। কোনো সামরিক স্থাপনায় যাতে ইরান হামলা করতে না পারে সে জন্য জিপিএস সুবিধা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ওদিকে শুক্রবার হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ বলেছেন, ইরানের দিক থেকে যে জবাব আসছে তা দ্ব্যর্থহীন। তবে এমন সিদ্ধান্তে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না তার গ্রুপ।

নাসরাল্লাহ টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে বলেন, ইরানের এই জবাবের ফলে ইসরায়েল কি আচরণ দেখায় তার ওপর নির্ভর করে এই অঞ্চল নতুন এক অবস্থায় প্রবেশ করবে।

উল্লেখ্য, হাসান নাসরাল্লাহ এখন আত্মগোপনে আছেন। তার এই গ্রুপটি মধ্যপ্রাচ্যে বেশ শক্তিশালী। বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী মিলিশিয়া তারা। ৭ই অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পর তারা লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রাথমিক পর্যায়ের অস্ত্রও ব্যবহার করেনি। নাসরাল্লাহ বলেন, ইসরায়েলে বিরুদ্ধে যে কোন যুদ্ধের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হিজবুল্লাহ। সূত্র: এনডিটিভি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ