দাউদকান্দি প্রতিনিধি॥
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ঘিরে মাত্র ১ কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে গড়ে উঠেছে অর্ধ শতাধিক অতি নি¤œ মানের প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার।যার কোনটিরই নিজস্ব যোগ্য ডাক্তার,নার্স,টেকনোলজিষ্ট নেই এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক অন্যান্য জনবলও নেই।কাছাকাছি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর অবস্থান হওয়ায় রোগী আসার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে ফোন কল করে ভাড়ায় ডাক্তার আনা হয়।আর ডাক্তার সাহেবরাও নগদ বেশি টাকা পাওয়ার লোভে কল পাওয়া মাত্র সামনের ফ্রি রোগী ছেড়ে ওদিকে দৌড়ান।
টিকে থাকার জন্য এ হাসপাতাল গুলোর প্রধান টার্গেট পরীক্ষা-নিরীক্ষা,প্রসব পূর্ববর্তী গর্ভবতী রোগী, টনসিল,হার্নিয়া,এপেন্ডিসাইটিস এর অপারেশন কারী রোগী।যা খুব লাভজনক বলে জানাযায়।এ ধরনের রোগী সংগ্রহের জন্য প্রতিটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের রয়েছে নিজস্ব নারী-পুরুষ দালাল বাহিনী।যাদেরকে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উক্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আঙ্গিনা,ইনডোর-আউটডোর,মেডিকেল অফিসারের রুম ও চেম্বারে ঘুরাফেরা করতে দেখা যায় এবং তাদের সাথে এ হাসপাতালের ডাক্তারদের দহরম-মহরম রয়েছে বলেও জানাযায়।এ দালাল চক্রের একজনের নাম ডলি।যিনি অতি পুরানো ও প্রভাবশালী।তিনি নির্ভয়ে সাংবাদিকদের জানান,টার্গেট মত রোগী পেলে ডাক্তার সাহেবরাই টেকনিক্যালী আমাদের ইশারা করেন আর আমরা রোগীকে বুঝিয়ে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিয়ে যাই।তাতে করে প্রাইভেট হাসপাতাল কতৃপক্ষ আমাদের ও ডাক্তার সাহেবদের মাস শেষে পার্সেন্টেজ প্রদান করে থাকে।
আবার উক্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সিংহভাগ ডাক্তার স্থানীয় ও দীর্ঘদিন বদলী না হওয়ায় অনেক প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ডাক্তার সাহেবরা নামে-বেনামে শেয়ার হোল্ডার হিসেবে রয়েছেন।কোন কোন ডাক্তার আবার একক মালিক হিসেবেও রয়েছেন।যে কারনে প্্রইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোর রোগী পেতে কোন সমস্যা হয়না।নিজেদের স্বার্থেই তারা রোগী প্রেরন করে থাকেন।এতে করে সু চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নি¤œ আয়ের গরীব রোগীরা।
এ প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগেরই লাইসেন্স নেই বা থাকলেও দির্ঘদিন নবায়ন নেই।সচেতন মহলের প্রশ্ন ডাক্তার,নার্স,টেকনোলজিষ্ট এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল ও ইনষ্ট্রুমেন্ট ছাড়া প্রতিষ্ঠান গুলো লাইসেন্স পায় কি করে বা নবায়ন ও লাইসেন্স ছাড়া চলে কি করে?এবং সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কোন রহস্যের কারনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিচ্ছেন না!!
এ ব্যাপারে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডাক্তার মজিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,যখন এ প্রতিষ্ঠান গুলো অনুমোদনের জন্য আবেদন করে তখন তারা সবকিছু ঠিক রাখেন কিন্তু অনুমোদন পাওয়ার পর অনিয়ম শুরু করে।অনুমোদনের পরে মনিটরিং এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন,জনবলের অভাব ও ব্যাস্ততার কারনে সব সময় মনিটরিং করা সম্ভব হয়না।তবে এ সপ্তাহ থেকে তিনি প্রয়োজনীয় সকল ব্যাবস্থা করবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য প্রতি বছর গড়ে দাউদকান্দির প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতে অপচিকিৎসার স্বীকার হয়ে ৮/১০জন প্রান হারান।তাতে প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোর বিরুদ্ধে সাময়ীক শাস্তির ব্যাবস্থা হলেও স্থায়ী কোন শাস্তি হয়না।আর দোষী ডাক্তার সাহেবরা অদৃশ্য ক্ষমতাবলে শাস্তির বাহিরে থাকেন।