বাগেরহাট প্রতিনিধি॥
দেড়শ বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে তিনদিন ব্যাপী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব আগামী ২ নভেম্বর শুরু হবে। প্রতি বছর কার্ত্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরের আলোরকোলে এই রাস উৎসব হয়ে আসছে। ২ নভেম্বর থেকে ৪ নভেম্বর এই উৎসব চলবে। কয়েক হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী পূর্ণার্থী ছাড়াও অন্য ধর্মের মানুষ দুবলার চরের আলোরকোলে জড়ো হবে আশা করছে বনবিভাগ। এই পূর্ণার্থীরা পূর্ণার্জনের জন্য সূর্যোদয়ের আগে এখানে পূর্ণ¯œানে অংশ নিবেন। সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে যাওয়ার জন্য সুন্দরবন পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগে মোট আটটি প্রবেশ দ্বার প্রস্তুত রেখেছে বনবিভাগ।
প্রবেশ দ্বারগুলো হচ্ছে, ঢাংমারী, বগী, কচিখালী, শরণখোলা স্টেশন, বুড়িগোয়ালিনি, কৈখালী, কয়রা কাশিয়াবাদ এবং নলিয়ান। এসব স্থান থেকে বনভিাগের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করা যাবে। আগামী ২ নভেম্বর সকাল থেকে রাস উৎসবে যোগ দিতে ইচ্ছুকদের অনুমতি (পাশপারমিট) নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে বনবিভাগ।
এদিকে রাস উৎসবকে ঘিরে সুন্দরবনে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সুন্দরবনে আসা সনাতন ধর্মাবলম্বী ও পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে বনবিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ আলাদা আলাদা টিম করে টহল দিবে। অন্যদিকে উৎসবের আড়ালে কোন চোরা শিকারিরা যাতে বনের কোন বন্য প্রাণীর ক্ষতিসাধন না করতে পারে সেজন্য বনভিাগের বিশেষ দল কঠোর নজরদারি করবে।
রাস উৎসব উৎযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ দে এই প্রতিবেদককে বলেন, দেড়শ বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবনের দুবলারচরের আলোরকোলে তিনদিন ব্যাপী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব শুরু হচ্ছে আগামী ২ নভেম্বর। প্রতি বছর কার্ত্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূর্ণিলাভের আশায় এখানে জড়ো হয়ে থাকেন। সূর্যোদয়ের আগে সাগরের জোয়ারের জলে পূর্ণ¯œান করলে পাপমোচন হয়ে থাকে বলে তারা বিশ^াস করেন। শ্রীকৃষ্ণ ভগবানের রাস উৎসবে ¯œান ছাড়াও প্রতিদিন পূজা অর্চনা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ তিনদিনের মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
সুন্দরবন বিভাগের বনসংরক্ষক (সিএফ) আমির হোসাইন চৌধুরী এই প্রতিবেদককে বলেন, সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে দর্শনার্থীদের জন্য আটটি প্রবেশ দ্বার রাখা হয়েছে। নিবন্ধিত একশ ফুটের বেশি লম্বা লঞ্চ প্রতি প্রবেশ ফি এক হাজার টাকা, একশ ফুটের নিচের লঞ্চের প্রবেশ ফি ৮০০ টাকা, পঞ্চাশ ফুটের নিচে ৫০০ টাকা, ইঞ্জিন চালিত ট্রলার প্রতি ৩০০ টাকা, ষ্পীডবোট ২০০ টাকা এবং নৌকা প্রতি ১০০ টাকা রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি লঞ্চ ও ট্রলার রাখার জন্য (অবস্থান ফি) বন বিভাগকে দিতে হবে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে। সুন্দরবনে ঢুকতে প্রতি দর্শনার্থীকে তিনদিনের জন্য ৫০ টাকা হারে প্রবেশ ফি দিতে হয়েছে। বনবিভাগের নির্ধারিত আটাটি প্রবেশ দ্বার থেকে আগামী ২ নভেম্বর সকাল থেকে রাস উৎসবে যোগ দিতে ইচ্ছুকদের অনুমতি (পাশপারমিট) নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাস উৎসবকে ঘিরে সুন্দরবনে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সুন্দরবনে আসা সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে বনবিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ আলাদা আলাদা টিম করে টহল দিবে। উৎসবের আড়ালে কোন চোরা শিকারিরা যাতে বনের কোন বন্য প্রাণীর ক্ষতিসাধন না করতে পারে সেজন্য বনবিভাগের বিশেষ দল কঠোর নজরদারি করবে বলে জানান ওই বন কর্মকর্তা।