জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ অনায়াসে জিতেছে বাংলাদেশ। বুধবার তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে সুযোগ দুই ম্যাচ আগেই সিরিজ নিজেদের করে নেওয়ার। সেই লক্ষ্যে স্বাগতিক দল মঙ্গলবার দুপুর তিনটায় মাঠে নামবে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম থেকে ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই চার-ছক্কার রোমাঞ্চ। এখানে দুইশ রানও নিরাপদ নয়। যেমনটা দেখা যাচ্ছে আইপিএলে। চলতি বছর টুর্নামেন্টটিতে ২৫০ রানও নিরাপদ মনে হচ্ছে না! এই অবস্থায় এই ফরম্যাটে সেভাবে খাপ খাওয়াতে পারছে না বাংলাদেশের ব্যাটাররা। জিম্বাবুয়ের মতো দলের বিপক্ষে ব্যাটারদের সংগ্রাম করে ম্যাচ জিততে হচ্ছে। শান্তদের কাছে ১২০-১৩০ রানও যেন মনে হচ্ছে পাহাড়সম লক্ষ্য।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচেই আগে ব্যাটিং করার সুযোগ ছিল। চট্টগ্রামের স্পোর্টিং উইকেটে সেই কাজটি অনায়াসেই করতে পারতো স্বাগতিকরা। আগে ব্যাটিং করে ২০০ কিংবা পরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০০ রান তাড়া করতে হলে নিখাদ একটা টপ অর্ডার প্রয়োজন। শান্তদেরও নিজেদের দুর্বলতা ভালো করেই জানা। টস জিতে দুর্বল প্রতিপক্ষকে ব্যাটিং পাঠানো নিজেদের দুর্বলতা বিবেচনা করেই। শান্তরা বুঝে শুনেই নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না।
আরও একটি উদহারণ দেওয়া যাক। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ২০ দলের সম্ভাব্য অধিনায়কদের মধ্যেও সবচেয়ে কম স্ট্রাইকরেট নিয়ে তালিকায় ১৯ নম্বরে আছেন শান্ত। তার পরে আছেন শুধু উগান্ডার অধিনায়ক ব্রায়ান মাসাবা। শান্ত অবশ্য এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের সহকারী কোচ নিক পোথাস বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আমি মনে করি তার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে তার স্ট্রাইকরেট নিয়ে আলাপটা অপ্রাসঙ্গিক; কারণ সে যদি বড় ইনিংস খেলতে পারে, তাহলে স্ট্রাইকরেটও বেড়ে যায়। সম্ভবত বিষয়টা হচ্ছে, কখন ওই পর্যায়ে পৌঁছাবে? সে যদি খেলাটা ওভাবে শুরু করতে পারে, তাহলে তার স্ট্রাইকরেটও উঁচুতে উঠে যাবে।’
শুধু কি শান্ত? টপ অর্ডার ব্যাটারদের মধ্যে কারও অবস্থায় স্বস্তিকর নয়। দুই ম্যাচে রান করা তানজিদ হাসান তামিম বেশ কয়েকবার জীবন পেয়ে রান করেছেন। লিটন দাস দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হয়েছেন। সবমিলিয়ে এই তিন ব্যাটারের নেতিবাচক ব্যাটিংয়ে শুরুতেই অস্বস্তিতে পড়ে যাচ্ছে বাংলদেশ দল। স্বয়ং বোর্ড সভাপতি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনও ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন।
সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেডের হাতে শিরোপা তুলে দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে বলেছেন, ‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আমরা দুটো ম্যাচ সহজেই জিতেছি। এটা সত্যি যে ব্যাটিংটা ভালো লাগেনি। ব্যাটিং দেখে খুবই ভয় লাগছে।’
একটি বিশ্বকাপ যায়, আরেকটি আসে। বাংলাদেশ পরের বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখিয়ে পার পেয়ে যান। কিন্তু পরের বিশ্বকাপেও চলতে থাকে একই ধারা। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের যা অবস্থা তাতে করে আরও একটি ভরাডুবির শঙ্কা করাই যায়। হয়তো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্তুতি নিয়ে অধিনায়ক-কোচদের মুখে অনেক কথাই শোনা যাবে। দুই বছর আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকে সিরিজে হারিয়ে বিশ্বকাপে যাওয়া বাংলাদেশের ভরাডুবি হয়েছিল। এবারও কি তেমন কিছুই হবে?