মাত্র কয়েক বছর আগেই তাদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ জাতিদাঙ্গায় মদত দিয়েছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমকে পালাতে হয়েছিল দেশ ছেড়ে। এবার বিদ্রোহীদের বাহিনীর অগ্রগতি ঠেকাতে সেই ‘ব্রাত্য’ রোহিঙ্গাদেরই জোর করে দলে টানছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার!
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’-এর রিপোর্ট বলছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে! তাদের মধ্যে বেশিভাগকেই গ্রাম থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেনাশিবিরে। মাত্র কয়েক সপ্তাহের প্রশিক্ষণের পরে রাখাইন প্রদেশে সক্রিয় বিদ্রোহী বাহিনী আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে সেই রোহিঙ্গা গ্রামবাসীদের।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে বিদ্রোহীদের অগ্রগতি রুখতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নীতি নিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সেনাবাহিনী। গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের ‘সক্ষম’ নাগরিকদের সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করে চলতি বছরের গোড়াতেই জারি হয়েছিল সরকারি নির্দেশিকা। আর সেই ‘সক্ষম’দের তালিকায় রয়েছেন জাতিদাঙ্গায় ঘরছাড়া হয়ে বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা যুবকেরাও।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী- ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল। তার পরে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আং সান সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ), রাখাইন প্রদেশে সক্রিয় সশস্ত্র জনজাতি বাহিনী আরাকান আর্মিসহ আরো কয়েকটি জনজাতি সংগঠন সেই বিদ্রোহে শামিল হয়েছে। ইতিমধ্যেই মিয়ানমারের বড় অংশ দখল করেছে বিদ্রোহী জোট।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা