• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৭ অপরাহ্ন

দৈনিক হাজার টন জ্বালানি পোড়াচ্ছে রোহিঙ্গারা

আপডেটঃ : রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৭

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ১২টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা দৈনিক এক হাজার টনেরও বেশি জ্বালানি কাঠ পোড়াচ্ছে বলে জানা গেছে। বসবাসের উপযোগী করে তোলার জন্য পাহাড় কেটেও শ্রেণি পরিবর্তন করেছে প্রায় আড়াই হাজার একর বনভূমি।সরকারি সামাজিক বনায়ন ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগানের ফলজ ও বনজ গাছ কেটে ঘর-বাড়ি তৈরি করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে।
সংরক্ষিত বনের কাঠ ব্যবহার করছে জ্বালানির কাজে। এতে উজাড় হচ্ছে উখিয়া-টেকনাফের বনাঞ্চল। অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। পরিবেশবাদী সংগঠনের অভিযোগ, রোহিঙ্গাদের সরকারি ও বেসরকারিভাবে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হলেও তাদের রান্নার জন্য জ্বালানি সরবরাহ না করায় উখিয়া টেকনাফের সংরক্ষিত বনের উপর প্রভাব পড়েছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দৈনিক হাজার টন জ্বালানি কাঠ পোড়াচ্ছে রোহিঙ্গারা। পুরাতন রোহিঙ্গাদের জ্বালানির ব্যবস্থা থাকলেও নতুনদের সেই ব্যবস্থা নেই। এছাড়া যে আড়াই হাজার বনভূমিতে রোহিঙ্গারা অবস্থান করছে, সেখানে সামাজিক বনায়ন রয়েছে প্রায় আড়াইশ’ একর। যা ইতোমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে। এর ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৩শ’ কোটি টাকা হবে বলে বন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সামগ্রীর পাশাপাশি কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা জ্বালানি সরবরাহ অতীব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। বন সম্পদ রক্ষায় এসব রোহিঙ্গাদের সরকারি সিদ্ধান্ত অনুসারে ৩ হাজার একর বনভূমিতে একত্রিত করে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে সীমাবদ্ধতার ভিতরে রাখা না হলে উখিয়া-টেকনাফের বন সম্পদ, পাহাড় শূণ্যের কোটায় চলে যাবে। পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারি সিদ্ধান্ত ৫টি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে বলে তারা মনে করেন।
ইনানী রক্ষিত বনাঞ্চলের সহ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের ফিল্ড সুপারভাইজার আবু সরওয়ার জানান, মানবতাকে পুঁজি করে উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গারা সরকারি সংরক্ষিত বনের গাছপালা ধ্বংস করেছে। তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও সংস্থাগুলো ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি, রান্নাবান্নার জন্য জ্বালানি কাঠ সরবরাহ করলেও বনের ওপর এ প্রভাবটি পড়ত না। পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সাইফুল এরশাদ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কারণে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। রোহিঙ্গারা পার্শ্ববর্তী বন থেকেই জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করছে। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবেশের উপর এ বিষয়টি সরকার অবগত রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এটি সমাধান হবে।’
কক্সবাজার বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (দক্ষিণ) আলী কবির বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেভাবে বনের গাছপালা উজাড় করছে এভাবে চলতে থাকলে কক্সবাজারে সবুজ আর থাকবেনা। তাই অন্যান্য ত্রাণের সাথে জ্বালানি কাঠ দেওয়ার পরামর্শ দেয়া দরকার। রোহিঙ্গাদের পাহাড় থেকে সরিয়ে ৩ হাজার একরের অস্থায়ী ক্যাম্প কুতুপালং এ নিয়ে আসা সম্পন্ন হলে বনভূমি রোহিঙ্গা মুক্ত হবে। তদস্থলে পরবর্তী বর্ষায় নতুন করে বনায়ন করার পরিকল্পনা করা হবে। সেক্ষেত্রে ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে উঠবে।’ তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জন্য জ্বালানি সরবরাহের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ