• শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৯ অপরাহ্ন

দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে দেশের মানুষ অতীষ্ঠ: ১২ দলীয় জোট

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪

১২ দলীয় জোটের নেতারা শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন। ছবি : এনটিভি

আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করার পাশাপাশি ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, ‘শুধু কয়েকজন ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিচার করলে হবে না। বরং যারা দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদ দেন তাদেরও বিচার করতে হবে।’

আজ শনিবার (২৫ মে) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন। ‘সীমাহীন লুটতরাজ, দুঃশাসন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মূল্যস্ফীতি ও আর্থিক অনিয়মের প্রতিবাদ’ শীর্ষক এই বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।

১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার। বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরামসহ আরও অনেকে।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘অতি সম্প্রতি দেশে অনেক ঘটনা ঘটেছে। সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ ও সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীরের অন্যায়-দুর্নীতির ঘটনা সবাই জানেন। কিন্তু আমার দাবি, শুধু তাদের বিচার করলে হবে না, তাদেরকে যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তাদেরও বিচার করতে হবে। সেজন্য সবাইকে রাজপথে নামতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের আন্দোলন সফল হবে, ইনশাআল্লাহ।’

সমাবেশে শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে দেশের মানুষ অতীষ্ঠ ও অসহায়। তারা এই ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেতে চায়। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই সরকারের পতন ঘটানোর লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কোনো দেশের তাঁবেদারি মেনে নেওয়া হবে না। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করছি।’

সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ ডুবন্ত নৌকায় আসীন। চারিদিকে হাহাকার। আজকে আমাদের গর্বের প্রতিষ্ঠান সেনাবাহিনীকে পঙ্গু করা হচ্ছে। বাহিনীর সাবেক প্রধান আজিজ দুর্নীতির দায়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন। পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীরের দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। মাদক ব্যবসায়ীরা সংসদ সদস্য হচ্ছেন। তাদের দুর্নীতির দায় তো সরকারের ওপর বর্তায়।’

এহসানুল হুদা বলেন, ‘আজকে ১০ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতি। ডলার ও রিজার্ভ সংকটের কারণে এটি হয়েছে। ইতোমধ্যে রিজার্ভ চুরি হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। আমরা ফ্যাসিস্ট ও ভোট ডাকাত আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে চাই।’ একইসঙ্গে প্রতিবেশী দেশের ভেজাল পণ্য বয়কট এবং চলমান আন্দোলনে সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মহিউদ্দিন ইকরাম বলেন, ‘যেভাবে চুরি ডাকাতির মহোৎসব চলছে তাতে ব্যাংক খালি হয়ে গেছে। রিজার্ভ নেই। ডলার সংকট। এখান থেকে বাঁচতে হলে এই সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে হবে। আজিজ-বেনজীরের শাস্তি হওয়া সময়ের দাবি। আমরা অবিলম্বে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। তার আগে বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দিতে হবে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নবাব আব্বাস আলী খান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল করিম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির আবু হানিফ, বাংলাদেশ এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম এ বাশার, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মুফতি জাকির হোসেন, জাতীয় দলের বেলায়েত হোসেন শামীম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির যুগ্ম মহাসচিব শরিফুল ইসলাম, জাতীয় ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক ফয়েজ আহমেদ ও ছাত্র জমিয়তের আহ্বায়ক খালেদ মাহমুদ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ