শুরুতে মিলেছিল দুইশোর্ধো সংগ্রহের আভাস। কিন্তু চিটাগং ভাইকিংস আটকে গেল ১৪৩ রানে। ম্যাচ মূলত ওখানেই শেষ। টপ অর্ডারদের দৃড়তায় সহজ লক্ষ্য ১৬ বল আর ৮ উইকেট হাতে রেখেই পূরণ করে আসরের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। অপরাদিকে বিপিএলের পঞ্চম আসরে চট্টগ্রামের যাত্রা শুরু হলো হার দিয়ে।
কুমিল্লার জয়ের মুল কারণ চট্টগ্রামের ব্যাটিং মেরুদন্ডে একযোগে সাইফ-ব্রাভোদের আঘাত। ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রানের খরচায় সাইফুদ্দি নেন ৩ উইকেট। ডিজে ব্রাভো নেন ২৯ রানে ২টি।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবারের বিপিএলের পঞ্চম ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নিয়ে হয়তো একটু চিন্তা-ই পড়ে গিয়েছিলেন তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে কুমিল্লাকে নেতৃত্ব দেয়া মোহাম্মাদ নবী। পাওয়ার-প্লের ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৬৩ রান তুলে ফেলেন লুক রনকি ও সৌম্য সরকার জুটি। কিন্তু দ্রæতই ঘুরে দাঁড়ায় নবীর বোলিং আক্রমন। সেটাও নবীর হাত ধরেই। ২১ বলে ৪ বাইন্ডারি ও ৩ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪০ রান করা রনকিকে অলক কাপালির ক্যাচে পরিনত করেন নবী। এরপরও ১০ ওভার শেষে কুমিল্লার স্কোর ছিল ১ উইকেটে ৯১। সেই দলটিই কিনা শেষ ১০ ওভারে যোগ করতে পারল মাত্র ৫২ রান। ২০ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ আটকে যায় ৭ উইকেটে ১৪৩ রানে।
এর মূল কৃতিত্ব তরুণ পেসার সাইফুদ্দিনের। সাথে যোগ দেন ক্যারিবীয় পেসিং-আলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো। ১০১ রানে শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান মুনাভিরাকে ফেরান ব্রাভো। এরপরই ১ রানের ব্যবধানে সৌম্য ও আনামুল হকের উইকেট দুটি তুলে নেন সাইফুদ্দিন। ¯øগ ওভারে নেন আরো একটি উইকেট। চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় তারকা মিসবাহ-উল-হক ১১ বল খেলে মাত্র ৬ রান করে আল-আমিনের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন।
পরাজিত দলের অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকও মাঝের ওভারে উইকেট হারানোকেই মনে করেন পরাজয়ের আসল কারণ, ‘আমাদের শুরুটা ছিল ১৮০-এর মত। আমরা ভেবেছিলাম কমপক্ষে ১৭০ তো হবেই। কিন্তু মাঝের ওভারগুলোতে আমরা উইকেট হারিয়ে ফেলি। এখানেই আমারা ম্যাচ হেরে গেছি।’
বিজয়ী অধিনায়ক মোহাম্মাদ নবীও জয়ের পুরো কৃতিত্ব দিলেন বোলারদের, ‘প্রথম ম্যাচে অধিনায়ক হিসেবে একটু চাপে ছিলাম। এবার সবকিছু নিয়ন্ত্রণেই ছিল। মাঝের ওভারগুলোতে রশিদ, ব্রাভো, সাইফুদ্দিন দারুণ বল করেছে। ব্যাটিং অর্ডারেও আমরা পরিবর্তন এনেছি যা কাজে দিয়েছে।’
ইমরুলের পরিবর্তে লিটন দাসের সঙ্গে কুমিল্লার ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন জস বাটলার। দুজনে গড়েন ৪৩ রানের উদ্বোধনী জুটি। ১৪ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৩ রানে লিটনের শুরুটা ছিল দারুণ। শুভাশিষ রয়ের এলবিডবিøউতে কাটা পড়ে তার ইনিংস। ৪২ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪৮ রান করা বাটলারের উইকেটটিও নেন শুভাশিষ। ওয়ানডাউনে নেমে ইমরুলও খেলেছেন দলের চাহিদা বুঝে। মার্লন স্যামুয়েলসের (১৮ বলে ৩৫) সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৪৪ রানের জুটিতে দায়ীত্ব দারুণভাবে শেষ করেন ইমরুল (৩১ বলে ৩৩)। প্রথম ম্যাচে সিলেট সিক্সার্সের কাছে ৪ উইকেটে হারা কুমিল্লাও পেয়ে যায় এবারের আসরে প্রথম জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চিটাগং ভাইকিংস : ২০ ওভারে ১৪৩/৭ (রনকি ৪০, সৌম্য ৩৮, মুনাভিরা ২১, এনামুল ৩, মিসবাহ ৬, রিস ৯, রাজা ১৮*, শুভ ৩, সানজামুল ১*; সানি ০/১৯, আল-আমিন ১/২৮, ব্রাভো ২/২৯, নবী ১/১৮, রশিদ ০/২১, সাইফ ৩/২৪)।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৭.২ ওভারে ১৪৪/২(লিটন ২৩, বাটলার ৪৮, ইমরুল ৩৩*, স্যামুয়েলস ৩৫*; সানজামুল ০/২৭, শুভ ০/২৯, তাসকিন ০/৩৬, শুভাশিস ২/২৪, রাজা ০/১৭, রিস ০/১০)।
ফল : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মোহাম্মাদ সাইফুদ্দিন।