ইউরোপে ডেঙ্গুবাহী মশার বিস্তার বেড়েই চলেছে। ফ্রান্স, স্পেন, গ্রিসসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১৩টি দেশে ডেঙ্গুবাহী মশার সন্ধান পাওয়া গেছে। ইউরোপে ডেঙ্গু জ্বর কেন বাড়ছে সে বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে এমন তথ্য পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর বিবিসির।
জলবায়ু পরিবর্তন টাইগার মসকিউটো নামের একটি বিশেষ প্রজাতির মশার বিস্তারের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করছে বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (ইসিডিসি)।
প্যারিসের উত্তরাঞ্চলে আগামী জুলাই মাসের শেষের দিকে অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হবে। সেখানকার কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই এই প্রজাতির মশার বিস্তার সম্পর্কে নজর রাখছে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।
ইসিডিসি সতর্ক করেছে যে, আন্তর্জাতিক ভ্রমণের কারণে ইউরোপে এই ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়বে। সে কারণে বাগান বা বারান্দা থেকে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা এবং রাতে মশারি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সাধারণ ফ্লুর মতো উপসর্গ নিয়েই শুরু হয় ডেঙ্গু। কিন্তু পরবর্তীতে তা গুরুতর হয়ে ওঠে এবং কিছু ক্ষেত্রে তা এতটাই মারাত্মক যে এতে মৃত্যুও হতে পারে।
বিশ্বে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে মারা যায়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, চলতি বছর বিশ্বে ৪০ হাজার মানুষ এ রোগে মারা যেতে পারে।
সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত অঞ্চল হলো লাতিন আমেরিকা। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালে সেখানে বছরে গড়ে পাঁচ লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। কিন্তু ২০২৩ সালে অঞ্চলটিতে ৪৬ লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। এদিকে ২০২৪ সালে এরই মধ্যে সেখানে প্রায় ৬০ লাখ কেস শনাক্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্রাজিলের মানুষ।
গত কয়েক বছরে ইউরোপেও ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। গত বছর ফ্রান্স, ইতালি এবং স্পেনের বহু মানুষ মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে ভ্রমণ করতে গিয়ে লোকজন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। গত বছর ইউরোপে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করতে গিয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। তবে স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে। গত বছর ইউরোপে ১৩০ জন স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গুতে সংক্রমিত হন। এর আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৭১ জন।