রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখন উত্তর কোরিয়ায় অবস্থান করছেন। রুশ সংবাদমাধ্যম আরআইএ জানিয়েছে, দুই নেতা একটি সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। তবে চুক্তিতে কী আছে তা এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি।
পুতিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ গতকাল রুশ গণমাধ্যমকে জানান, একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে, যার মধ্যে নিরাপত্তা ইস্যুও থাকতে পারে।
এদিকে পুতিন এই সফরে আবারও যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের আক্রমণ করেছেন। কিমের সাথে আলোচনার শুরুতে ‘আধিপত্যবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী নীতির’ বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পুতিন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এটি পুতিনের পূর্ববর্তী বার্তাগুলির ঘনিষ্ঠভাবে প্রতিফলিত করে। সফরের আগে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে তার লেখা এক চিঠিতে নতুন বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার অঙ্গীকার করা হয়েছে, যা থাকবে পশ্চিমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। পুতিন তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ, ব্ল্যাকমেইল ও সামরিক হুমকি সত্ত্বেও পিয়ংইয়ংকে সমর্থন দেওয়ারও অঙ্গীকার করেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক সহযোগিতা ‘সমতা এবং একে অপরের স্বার্থের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধার নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
বহু দশক ধরে দৃঢ় বন্ধুত্ব ও ঘনিষ্ঠ সুপ্রতিবেশীসুলভ আচরণ রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়াকে সংযুক্ত করেছে।
পুতিনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে উত্তর কোরিয়ার নেতা বলেন, দুই দেশ ‘নতুন সমৃদ্ধির’ যুগে প্রবেশ করছে। কিম আরও বলেন, তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকে ‘পুরোপুরি সমর্থন’ করেন। রাশিয়া বিশ্বে কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইউক্রেন আগ্রাসন উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে পুতিনের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে।
বিবিসির খবর অনুসারে, উত্তর কোরিয়াকে প্রায়ই বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন একটি রাষ্ট্র হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু কয়েক দশক ধরে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে দেশটির গভীর সম্পর্ক বিরাজ করছে।
বিবিসির দ্য গ্লোবাল স্টোরি পডকাস্টে উত্তর কোরিয়ার পর্যবেক্ষক জ্যঁ লি বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে পিয়ংইয়ং তাদের বাণিজ্যের ৯০ শতাংশই চীনের ওপর ‘প্রায় পুরোপুরি নির্ভরশীল’ হয়ে পড়েছে। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন পুতিনের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছে। সূত্র : বিবিসি