বগুড়ার মাটিডালিতে ব্যাংকের সিন্দুক ভেঙে ২৯ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলার সোনাতলা, শিবগঞ্জ, আদমদীঘিসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় আইএফআইসি ব্যাংকের চুরি যাওয়া ২৯ লাখ টাকার মধ্যে ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা উদ্ধার এবং এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুর ১২টার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
গ্রেফতাররা হলেন, বগুড়া সদর উপজেলার বড় টেংরা এলাকার জাহিদুল ইসলাম, সোনাতলা উপজেলার বালুয়াহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ আটকরিয়া গ্রামের পাভেল, আদমদীঘি উপজেলার তালশন কুন্ডুপাড়া এলাকার বিপ্লব সরকার মিথুন ওরফে মিঠু ও গাইবান্ধার ফুলছড়ির সিংড়িয়া এলাকার বিমল রাজভর।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে পাভেল এবং পরে পাভেলের দেওয়া তথ্য বাকি আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এদের মধ্যে পাভেলের বিরুদ্ধে দুটি এবং জাহিদুলের বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা আদালতে বিচারাধীন। গত ১৩ জুন বগুড়া শহরের মাটিডালী এলাকায় আইএফআইসি ব্যাংকের উপ শাখায় সিন্দুক ভেঙে চোরেরা ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৬১৮ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পরে পুলিশের একাধিক টিম চোরদের ধরতে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা শুরু করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, ব্যাংকে চুরির ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী জাহিদুল ইসলাম। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী ১২ জুন দিবাগত রাতে মাটিডালী ব্রিজের কাছে রাকিবসহ বাকি আসামিরা একত্রিত হন। এসময় জাহিদুলের নির্দেশে বিমল এবং রাকিব আইএফআইসি ব্যাংকের পেছনে দিয়ে গিয়ে বিল্ডিংটির আশপাশে পর্যবেক্ষণ করে এবং অপর অভিযুক্তদের ক্লিয়ারেন্স দেয়। পরে জাহিদুল একটি টায়ার লিভারসহ ব্যাংকের বিল্ডিংয়ের পেছনে অবস্থান নেয়। এতে যুক্ত হন মিথুন ও পাভেল। এরপর জাহিদুল প্রথমে ব্যাংকের বিল্ডিংয়ে উঠে এবং পরে বিমলও তার সঙ্গে প্রবেশ করে। এসময় বাকি আসামিরা বিল্ডিংয়ের আশপাশে সতর্ক অবস্থানে থাকে। এরপর জাহিদুল ও বিমল নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে মুখে মাস্ক ও মাথা পলিথিন দিয়ে ঢেকে ফেলে। পরে তারা দুজন ব্যাংকের ভেতরে সিন্দুক ভেঙে ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৬১৮ টাকা চুরি করে। চুরির টাকা তারা ব্যাংকের ময়লা রাখা বস্তায় নিয়ে বের হয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
ব্যাংকে চুরির আগে গত এক মাসে জাহিদুল একাধিকবার আসে। আইএফআইসি ব্যাংকের উপশাখায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল নিশ্চিত ভেবে চুরির পরিকল্পনা করে। গ্রেফতারের পর পাভেলের কাছ থেকে এক লাখ এক হাজার ৭৭০ টাকা, বিমলের কাছ থেকে দুই লাখ ৯৩ হাজার ২২০ টাকা, মিথুনের কাছ থেকে এক লাখ ৯১ হাজার ২৫০ টাকা এবং জাহিদুলের কাছ থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা এবং চুরির টাকা দিয়ে কেনা এ লাখ টাকা দামের একটি পুরাতন মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতার আসামিদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে। এছাড়া এ ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।