• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০২৪

ফরিদপুরে তানজিলা আক্তার ওরফে তহেরা (২১) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে মুমূর্ষু অবস্থায় ওই গৃহবধূকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। পরে ওই রাতেই মৃত্যু হয় তানজিলার।

তানজিলা আক্তার ফরিদপুর সদরের ডোমরাকান্দি উত্তর পাড়া গ্রামের বাসিন্দা তোবারেজ মোল্লার মেয়ে। প্রায় ৫ মাস আগে প্রেমের সর্ম্পক ধরে সদরের পূর্ব গঙ্গাবর্দী এলাকার জাহিদ ফকিরের ছেলে জিসান আহমেদের (২১) সাথে বিয়ে হয় তার। তানজিলা সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

তানজিলাকে বুধবার রাত ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক লিটন গাঙ্গুলি তানজিলার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে তাকে ওই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পঞ্চমতলায় অবস্থিত সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাত ১১টার দিকে মারা যান তানজিলা। এ ঘটনায় তানজিলার বাবা সাবেক সেনা কর্মকর্তা তোবারেজ মোল্লা ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তানজিলার স্বামী জিসান আহমেদকে আটক করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ।
তানজিলার বাবা তোবারেজ মোল্লা বলেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য আমার মেয়ের উপর জিসান ও তার মা জবেদা বেগম নির্যাতন করতো। জিসানের মোটরসাইকেল দেওয়ার জন্য চাপ দিতো, চাপ দিতো বিদেশে যাওয়ার জন্য টাকা দেবার। তিনি বলেন, গত বুধবার রাত ৮ টার দিকে আমার মেয়ের সাথে কথা হয়। রাত ১২ টার দিকে আমার মেয়ের নাম্বার থেকে জিসানের এক বন্ধু পরিচয় দিয়ে ফোন করে বলে তানজিলা আত্মহত্যা করতে গেছিলো আমরা তাকে মেডিকেলে ভর্তি করেছি। আমরা রাতেই হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখি। জিসান বা কাউকে আমরা তখন তানজিলার কাছে পাইনি।
তিনি বলেন, আমার মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জিসান নেশাগ্রস্থ ছিল। যৌতুক না পেয়ে আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
জিসানের মা জবেদা বেগম বলেন, জিসান ও তানজিলার দুজন ভালবেসে বিয়ে করেছিল। তাকে কেন নির্যাতন করতে যাবে। আর আমিও কখনও যৌতুকের জন্য তানজিলাকে নির্যাতন করিনি। জিসান আমাকে গতকালের ঘটনা যা বলেছে তা হলো, জিসান বাড়ির বাইরে একজনের কাছ থেকে টাকা আনার জন্য গিয়েছিলেন। রাত ১০টার পরে তানজিলার ফোনে সে বাড়ি ফিরে আসে। বাড়িতে গিয়ে সে দরজা বন্ধ দেখতে পান। পাশের এক দোকান থেকে রড নিয়ে দরজা ভেঙ্গে জিসান দেখতে পায় তানজিলা ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে। তার পর স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মো. সালাউদ্দিন বলেন, জিসান ও তানজিলার মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিল। জিসানের পরিবারের পক্ষ হতে আত্মহত্যার কথা বলা হলেও তানজিলার শরীরে স্বাভাবিক কিছু জখমের চিহ্ন রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাউদ্দিন আরও বলেন, মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেরর মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে। ইতিমধ্যে জিসানকে পুলিশ আটক করেছে। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ বিষয়ে ময়না তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। আমাদের আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ