বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমান সরকারের মেয়াদের তিন মাস আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবির পক্ষে জনমত গড়ে তোলা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। সরকার দাবি না মানলে রাজপথে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ারও আহবান জানান খালেদা জিয়া।
রংপুরসহ ছয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও যাবে বিএনপি। রংপুরে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জোটের নেতারাও সফর করবেন।
আগামী দিনের রাজনৈতিক কর্মসুচী ও নির্বাচনমুখী কর্মকাণ্ডে জোটকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোন সরকারী ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা না দিয়ে জোটের শরিকরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঐক্য অটুট রেখে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। যে কোনো মূল্যে জোটের ঐক্য রক্ষার বিষয়টি আলোচনায় বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। আটটি বিভাগীয় শহর ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জেলায় খালেদা জিয়ার সফর করার পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি জোরালোভাবে উত্থাপন করার জন্য বেগম জিয়াকে পরামর্শ দেন জোটের শরিকরা।
খালেদা জিয়া আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করার দাবী আদায়ে সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বাড়ানোর কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাত সোয়া নয়টার বৈঠক শুরু হয়ে রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে শেষ হয়।
বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীসহ ১৭ টি শরিক দলের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন।
বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের আবদুল হালিম, জাতীয় পার্টি (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, খেলাফতে মজলিশের মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির রেদোয়ান আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের এম এ রকিব, জাগপা সভাপতি রেহানা প্রধান, এনডিপির চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা, এনপিপির সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপ ভাসানীর সভাপতি জেবেল রহমান গানি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ইসলামিক পার্টির আবু তাহের চৌধুরী, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাছ, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর কারণে তিনি ছিলেন না। জোটের শরিক লেবার পার্টিকে সংগঠনটির উপদলীয় কোন্দল বিভক্ত নেতৃত্বের কারণে কোনো অংশকেই এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
বৈঠক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে ‘জোর দেওয়ার’ জন্য শরিকদের পরামর্শ দেন। তিনি বিচার বিভাগের বর্তমান সংকট নিয়ে কথা বলেন। আগামীতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হওয়ার ক্ষেত্রে জ্যোষ্ঠতা অনুসরণ ও সংবিধান সম্মতভাবে বিচারপতি নিয়োগে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করতে শরিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বৈঠকে বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার ও আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব এবং জামায়াত ইসলামের আমিরসহ শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার ও রিমান্ড, জোটের শরিক দল কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এমএম আমিনুর রহমান নিখোঁজ থাকায় নিন্দা প্রস্তাব করা হয়।