কর্তৃত্ববাদী শেখ হাসিনার পতনের দাবির আন্দোলনে অংশ নিয়ে প্রবাসীরা দেশে মেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যায়। তবে গণঅভ্যূত্থানে হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বেড়ে গেছে। ২০ আগস্ট একদিনেই প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রায় ১১ কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, আগস্টের ২০ তারিখ পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ে আসা রেমিট্যান্সের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেশি। আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, গত ৪ আগস্ট থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৮ কোটি ৭১ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং ১১ থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত এসেছে ৬৫ কোটি ১৪ লাখ ডলার। এ ছাড়া গত ২০ আগস্ট একদিনেই প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১০৯ মিলিয়ন ডলার। চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ২০ দিনেই দেশে আসা রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৪০৬ মিলিয়ন ডলার বা ৩৬ শতাংশ।
গত জুলাইয়ে কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশ জুড়ে সংঘাত-সংঘর্ষ, কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধের প্রেক্ষাপটে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যায়। ওই সময় দেশে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন করেন অনেক প্রবাসী। যার প্রভাব পড়েছিল প্রবাসী আয়ে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দিল্লি পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ১৫ বছর পর কর্তৃত্ববাদী হাসিনা রেজিমের পতন ঘটে। হাসিনার পালানোর পর অন্যান্য মন্ত্রী-এমপিরা পালাতে শুরু করেন। দেশের মানুষ দ্বিতীয় বার স্বাধীনতার মুখ দেখে। এরপর আবার দেশ গঠনে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি। এর ফলে আবারও প্রবাসী আয় এখন বাড়তে শুরু করেছে বলে মনে করেন ব্যাংকাররা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ভাবে রেমিট্যান্স আসা অব্যাহত থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ দ্রæত উপরে উঠতে থাকনে।