• শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন

উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতি চলছে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। তাকে কোন দেশে নেয়া হবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে গত বুধবার পরিবারের সদস্যরা একটি বৈঠক করেছেন। জানা গেছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকরা বাংলাদেশে এসে খালেদা জিয়ার যকৃতে ‘টিপস’ সম্পন্ন করায় প্রথম দিকে ওই দেশটি বিবেচনায় থাকলেও এখন তাকে ইংল্যান্ডে নেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান এবং ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর পরিবার সেখানে থাকায় ইউরোপের এই দেশটিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তারা। তবে ইংল্যান্ডের পাশাপাশি জার্মানীর বিষয়টিও পরিবারের বিবেচনায় রয়েছে।

খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ড ও বিএনপির একটি সূত্র বলছে, চিকিৎসার জন্য সরাসরি ইংল্যান্ডে নাকি প্রাথমিকভাবে স্বল্প দূরত্বের কোনো দেশে নেয়া হবে, তা মূলত খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে। এই মুহূর্তে তার আকাশ পথে টানা ১০-১৫ ঘণ্টা ভ্রমণ করার মতো শারীরিক সক্ষমতা আছে কি না, তা যাচাইয়ের জন্য আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যে তাকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার অথবা বিশেষায়িত অন্য কোনো হাসপাতালে নেয়া হতে পারে। দীর্ঘ ভ্রমণের ধকল সামলানোর অবস্থায় থাকলে তাকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে। মোটেই কালক্ষেপণ করবে না পরিবার। অন্যথায় ওই হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সম্পন্ন অথবা আকাশ পথে স্বল্প দূরত্ব বিবেচনায় প্রাথমিকভাবে তাকে সিঙ্গাপুর কিংবা থাইল্যান্ডে নেয়া হতে পারে। এরপর শারীরিক অবস্থার উন্নতি সাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে পরবর্তীতে ইংল্যান্ডে নেয়া হতে পারে।

খালেদা জিয়ার পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ এক বিএনপি নেতা বলেন, ফ্লাইটে উঠা এবং নামার সময় এক ধরনের চাপ থাকে। ম্যাডাম এই মুহূর্তে সেটা সহ্য করতে পারবেন কি না, চিকিৎসকরা তা যাচাইয়ের জন্য উনাকে কয়েক দিনের মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। ম্যাডাম দীর্ঘ ভ্রমণের ধকল সামলানোর মতো অবস্থায় থাকলে দ্রুতই তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে। সেক্ষেত্রে সাথে সাথেই ভিসা প্রসেসিংয়ের কাজ শুরু করা হবে। এ কাজে দু-তিনদিন সময় লাগবে। ম্যাডামের পরিবার তাকে ইংল্যান্ডে নিতে চায়।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরই উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার আলোচনা আবার শুরু হয়। তখন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের পক্ষ থেকে বেগম জিয়ার প্রতিনিধির কাছে তার নবায়নকৃত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) হস্তান্তর করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে খালেদা জিয়ার সাথে পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও চিকিৎসকের ভিসার আবেদনও করা হবে। প্রায় দেড় মাস এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বুধবার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফিরেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ফিরোজায় ‘হঠাৎ অসুস্থ বোধ করায়’ গত ৮ জুলাই ভোর রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দিন মুক্তির সুসংবাদ পান তিনি।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির নতুন সদস্য অধ্যাপক ডা: এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, বাসায় চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে। সেই কাজও চলছে। তিনি আরো জানান, তারা ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য কিংবা জার্মানির মাল্টি ডিসিপ্লিনারি অ্যাডভান্স সেন্টারে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু এসব দেশে দীর্ঘযাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় শারীরিক সুস্থতা তার নেই। তিনি ভ্রমণ করার মতো সুস্থতা লাভ করলেই তাকে বিদেশে নেয়া হবে।

৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসের পাশাপাশি ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস ছাড়াও হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনিসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ