• শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
যুক্তরাষ্টের বিরুদ্ধে এক হচ্ছে ইরান চীন ও রাশিয়া পালিয়ে যাওয়া হাসিনার সব ধরনের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা ট্রাইব্যুনালের ভৈরব থেকে গ্রেফতার আইনজীবী সাইফুল হত্যার প্রধান আসামি চন্দন তালিকায় নাম না থাকায় ফিরে আসেন কর্নেল অলি, যা বললেন জামায়াত আমির অবশেষে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে গেজেট জারির উদ্যোগ আলোচিত ছাত্র হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার ভারতীয় নাগরিক সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক শান্তিরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে নয় বরং ভারতেই পাঠানো উচিত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শ্রমবাজারে ঘাটতি মেটাতে তিন লাখ বিদেশি শ্রমিকের প্রয়োজন গ্রিসে এবার আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি ভারতীয় রুপির দাম বাংলাদেশেও কমেছে

প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলোচনায় সমস্যার সমাধান করছি দূত সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

আপডেটঃ : সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সব সমস্যা দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সব বিরোধ দ্বিপাক্ষিক উপায়েই সমাধান করছি। এই দুটি দেশের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সমুদ্র সীমান্ত ও স্থল সীমান্ত নিয়ে বিরোধ আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করেছি। প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেই আমরা এগিয়ে যাব। সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে দশ লাখ রোহিঙ্গা এল, আমরা আশ্রয় দিয়েছি। কিভাবে ফেরত পাঠাব সেজন্য একটি সমঝোতা চুক্তি করেছি। দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগেই হয়েছে। সমাধানও হবে। তৃতীয় পক্ষ কেন ডাকবো। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহল সমর্থন দিচ্ছে। এটা আমাদের বড় সাফল্য।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল রবিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে প্রথমবারের মতো আয়োজিত তিনদিনব্যাপী দূত সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও হাই কমিশনারদের কাজকে নিছক চাকরি হিসেবে না দেখে দেশ ও জাতির স্বার্থ রক্ষার এক মহান দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করার আহবান জানান। তিনি বলেন, বিদেশে আপনারা একেকজন একেকটি বাংলাদেশ। আপনাদের কাজ নিছক চাকরি করা নয়, আরও অনেক বড় এবং মহান কিছু। দেশের ১৬ কোটি মানুষের হয়ে আপনারা সেখানে প্রতিনিধিত্ব করছেন। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সব সময় দেশের স্বার্থে আপনাদের কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব দেশে আমাদের অধিক সংখ্যক প্রবাসী রয়েছেন, সেসব দেশে তাদের প্রতি আলাদা নজর দিতে হবে। তারা যাতে কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের বিপদে-আপদে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে মাঝেমধ্যেই নেতিবাচক প্রচারণা হয়। উচ্চমানের পেশাদারিত্ব দিয়ে সেসবের মোকাবিলা করতে হবে। আর এজন্য নিজ দেশ, দেশের মানুষ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই দূত সম্মেলনের আয়োজন করেছে। বর্তমানের জটিল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা কি হবে সে বিষয়ে মতবিনিময়ের জন্যই এই সম্মেলনের আয়োজন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। পররাষ্ট্র সচিব মোঃ শহীদুল হক অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আমার দেশের নাগরিক, তাদের ভালো-মন্দ দেখা, তাদের সুযোগ-সুবিধা দেখা, অসুবিধাগুলো দূর করা আপনাদের কর্তব্য। তিনি বলেন, সেই হিসেবে প্রতিটি রাষ্ট্রদূতকে আমি অনুরোধ করবো আপনারা যেখানেই থাকেন অন্তত আমাদের প্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গে সপ্তাহ বা মাসে একটা দিন সময় দিয়ে তাদের সমস্যাগুলো শুনবেন এবং সেগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেবেন। এসময় তিনি বলেন, এটা ভুলে গেলে চলবে না তারাই কিন্তু মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্থ উপার্জন করে এবং তারা যে টাকা পাঠায় সেটাই আমাদের রিজার্ভের একটা বড় অংশ। অর্থনীতিতে তারা বিরাট অবদান রাখছে। আর আমরা যে এতগুলো কূটনৈতিক মিশন চালাচ্ছি তার সিংহভাগ উপার্জন কিন্তু তারা করছে। কাজেই সেক্ষেত্রে তাদের একটা গুরুত্ব আমাদের কাছে রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে তিনি আরো সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, যে সমস্ত দেশ এই ইস্যুতে আমাদের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাদের সেই বিষয়গুলোও দেখে সরকার। তবে, আমরা কারো মুখাপেক্ষী হয়ে থাকিনি ‘কপ-১৫’ এর পর আমরা দেশে এসে নিজস্ব বাজেটে ফান্ড তৈরি করে এটা মোকাবিলার উদ্যোগ নিয়েছি।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রশ্নে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এই মাটিতে কোনোরকম জঙ্গিবাদ আমরা হতে দেব না। আমাদের ভূখণ্ডকে কোনো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্যও আমরা ব্যবহার করতে দেব না। আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান চাই।

প্রধানমন্ত্রী বিদেশি বিনিয়োগের নিশ্চয়তা বাড়ানো, অধিকতর বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বাংলাদেশের পণ্যের জন্য নিত্যনতুন বাজারের সন্ধান করা, প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রয়োজনীয় পরিসেবা প্রদান এবং তাদের দক্ষতা ও জ্ঞানকে দেশের স্বার্থে কাজে লাগানো এবং আধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং আইসিটি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে বিদেশি রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের নয় দফা নির্দেশনাও রাষ্ট্রদূতদের প্রদান করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ