• মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সামরিক শাসন জারি করলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ভারত অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে কাজ করতে চায় ফের খারিজ মাস্কের ৫৬ বিলিয়ন ডলার পারিশ্রমিকের আবেদন বিজেপি ক্ষমতা হারানো হাসিনার চেয়ে বেশি পাগল হয়েছে : রিজভী ভারতীয় হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরি তলব বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপদ: মাহমুদুর রহমান ত্রিপুরা আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ ভারতের ৪৭৩০০১ শূন্যপদে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের নির্দেশ ভারতে আগরতলায় বাংলাদেশি দূতাবাসে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা! ভারত সরকারকে মমতার অনুরোধ বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠাতে ব্যবস্থা নিতে

অর্থ উপদেষ্টা হাত চেপে ধরে যা বললেন আইএমএফ প্রধান

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪
ফাইল ছবি

হলভর্তি বিভিন্ন দেশের অর্থমন্ত্রীদের সামনে মঞ্চে বসে থাকা আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা চেয়ার থেকে উঠে এসে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের হাত চেপে ধরে বললেন, ‌‘সালেহউদ্দিন আহমেদ আমার সাবেক সহকর্মী। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বাংলাদেশ আমার আগেরই চেনা।

‘দেশটা অর্থনৈতিক উন্নয়নে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। ভালো করে চলেছে। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সেখানে ব্যাপক সংস্কার কার্ষক্রম নিয়েছে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা এই সংস্কার কার্যক্রমে জোরালো সহযোগিতা ও সমর্থন দিয়ে আসছি। তারা লোন পরিশোধও ভালো করছে। নানা রকম সংকটে থেকে কিস্তি খেলাপি হয়নি। দেশটি নতুন করে কিছু ঋণের প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা সেগুলো নিয়েও ইতিবাচক চিন্তা করছি।

বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সদর দপ্তরে চলমান বার্ষিক সভার ভি-২০ মিনিস্ট্রিয়াল ডায়ালগে বাংলাদেশ সম্পর্কে এভাবেই চিত্র তুলে ধরেন জর্জিয়েভা। ভি-২০ হলো জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে ৬৮টি দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সেসব দেশের একটি জোট। বাংলাদেশ এর অন্যতম সদস্য। জর্জিয়েভার এমন সম্বোধনে পুরো হলরুমে তখন মুহুর্মুহু হাত তালি।

এদিকে, বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে কারিগরি, নীতিগত সহায়তা দিতে আবারও আশ্বাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ। ওয়াশিংটনে সংস্থা দুটির সদর দপ্তরে চলমান বার্ষিক সভায় বুধবারও এ আশ্বাস দেয় বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এর আগেও এমন সহযোগিতার কথা একাধিকবার জানিয়েছে সংস্থা দুটি। যদিও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কার্যকর তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।

অন্যদিকে একই দিনে এক ব্রিফিংয়ে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সদর দপ্তরে চলমান দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের কাছে, আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে ইতিবাচক সাড়া মিলছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভায় তিনি আরো জানান, নানা সংকট আর চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।

বার্ষিক সভার দ্বিতীয় দিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি নিয়ে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক আউটলুক রিপোর্ট প্রকাশ করে আইএমএফ। যাতে সংস্থাটি বলেছে, এ বছর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে সাড়ে ৪ শতাংশ। তবে নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে আশাবাদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্ট ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে এবারের বার্ষিক সভা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। তাই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আস্থা ফেরাতে, একাধিক পক্ষের সাথে বৈঠক করেন নতুন বাংলাদেশের আর্থিক খাতের নীতি নির্ধারকরা। অবশ্য আগের সরকারের সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি ও লাখ লাখ কোটি টাকা লোপাট সত্ত্বেও অর্থউপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রশংসাই করেছেন বিশ্বব্যাংকের সভায়। এমনকী আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকও প্রশংসায় ভাসিয়েছে বাংলাদেশকে।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘১৯৯০ এর পরের সব সরকারই এ দেশের উন্নয়ন ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এটা অনস্বীকার্য। এখানে কোনো সরকারকেই বাহবা দেওয়া বা কাউকে হেয় করার মতো একক কোনো বিষয় নির্ভর করে না।’

এদিন প্রকাশিত গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টে বলা হয়, এখনো বহু দেশে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে মুদ্রা ব্যবস্থাপনা ও চড়া সুদহার নিয়ে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। বাংলাদেশকে এ খাতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে সহায়তা দেবে আইএমএফ।

এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ উন্নতির ধারাবাহিকতার স্বীকৃতি পেল আরো একবার বিশ্বমঞ্চে। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বৈঠকে আইএমএফ এমডি ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা সামষ্টিক অর্থনীতি এবং মানব উন্নয়নে বাংলাদেশের অর্জনের প্রশংসা করেছেন। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নব্বই পরবর্তী সব সরকারই এই কৃতিত্বের দাবিদার। সরকারের পাশে থাকবে উন্নয়ন সহযোগীরা, সেই প্রতিশ্রুতিও পুর্নব্যক্ত করা হয়েছে।

দুর্যোগপ্রবণ ৬৮ দেশের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধির এই নিম্নগতি নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয় সরকার। বরং ধাক্কা সামলে ভালো কিছুর প্রত্যাশা তার কথায়।

বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তরে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, ব্যাংক থেকে ঠিক কী পরিমাণ অর্থ লোপাট হয়েছে, শিগগিরই তার হিসাব জানা যাবে। এ সময় গর্ভনর ড. আহসান এইচ মনসুরও প্রশ্নের জবাব দেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী মনে করছেন, সঠিকভাবে ব্যয় করতে পারলে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে যেকোনো পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়নে আর্থিক এবং কারিগরি সহযোগিতা দিতে সম্মত হয়েছে উন্নয়ন সহযোগীরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ