ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক আসিফ নজরুল চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর নিয়োগ নিয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে মানহানি ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনে (৫৭ ধারা) মাদারীপুরে দায়ের করা দুটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন।
মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত আবেদন শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ জামিন মঞ্জুর করেন। আদেশে মানহানির মামলায় ১০ সপ্তাহ ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় পুলিশের প্রতিবেদন (রিপোর্ট) দেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আদালতে আসিফ নজরুলের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মনিরুজ্জামান কবির। এ সময় আদালতে আসিফ নজরুল উপস্থিত ছিলেন।
মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, মানহানির মামলায় আদালত ১০ সপ্তাহের এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না করা পর্যন্ত আগাম জামিন দিয়েছেন।
মাদারীপুর সদর থানায় আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ৫৭ ধারায় মামলা করা হয়। নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের ভাগ্নে সৈয়দ আসাদউজ্জামান মিনার বাদি হয়ে এ মামলা করেন। এ ছাড়া গত ২৪ নভেম্বর নৌমন্ত্রীর চাচাতো ভাই মাদারীপুর জেলা পরিষদের সদস্য খান ফারুক মাদারীপুর মুখ্য বিচারক মো. জাকির হোসেনের আদালতে মানহানি মামলাটি দায়ের করেন।
মাদারীপুর সদর থানায় করা এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পেজে চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর পদে (জাহাজের রশি বাঁধা ও পাহারা দেওয়াই যাদের মূল কাজ) নিয়োগ নিয়ে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের বিরুদ্ধে অসত্য তথ্য দিয়েছেন।
এ ছাড়া আসাদউজ্জামান তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মাদারীপুর সদর থানায় আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আদেশের জন্য পাঠানো হয়।
জানা যায়, গত ১৮ নভেম্বর আসিফ নজরুল চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর পদে নিয়োগ নিয়ে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেন। সেখানে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়োগ পরীক্ষায় ৯২ জন উত্তীর্ণ হয়েছে, যার মধ্যে ৯০ জন নৌপরিবহন মন্ত্রীর এলাকা মাদারীপুরের বাসিন্দা। অথচ উনি চাইলে ৯২ জনই উনার এলাকার লোক হতে পারতো। দুইজন ভিন্ন এলাকার লোক নিয়োগ দিয়ে উনি সততার যে দৃষ্টান্ত দেখালেন তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
তবে এ ব্যাপারে আসিফ নজরুল বলেন, নৌমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকের ওই পোস্ট তার নামে করা ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া হয়েছিল। ওই ভুয়া অ্যাকাউন্টের বিষয়ে ফেসবুকে তিনি বিভিন্ন সময়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন।