চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আমন্ত্রণ পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে।
এই রিপোর্ট লেখার আগ পর্যন্ত ওয়াশিংটনের এই আমন্ত্রণ চীন আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেনি, আবার অফিসিয়ালি প্রত্যাখ্যানও করেনি। তবে চাইনিজ ট্রেডিশন অনুযায়ী তারা তাদের সুপ্রিম লিডার কে কোন পরাক্রমশালী দেশের প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে অতিথির কাতারে দেখতে পছন্দ করেনা। চীনা জনগণের কাছে তাদের সর্বোচ্চ নেতার সম্মান অন্য সবকিছুর উপরে। মোটামুটি নিশ্চিত ভাবে বলা যায় চীনা প্রেসিডেন্ট এই অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না।
এরপরেও এই খবর প্রকাশিত হবার পরে যেন ভারতের কপালে ভাজ পড়েছে, । ডোনাল্ড ট্রাম্প কে বন্ধু বলে পরিচয় দেওয়া উগ্র হিন্দুত্ববাদী নরেন্দ্র মোদি সকলের সামনে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
চীনের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করছেন ট্রাম্প এ নিয়ে ভারতীয়দের মাথায় হাত। ভারতীয় কূটনীতির ব্যর্থতার আরেকটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ বলে প্রতিমান হচ্ছে। এই আমন্ত্রণ বেশ ঘটা করে প্রচার করছে মার্কিন মিডিয়া। ভারতীয় মিডিয়ায় এই নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বলে বড়াই করা ‘গুজরাটের কসাই’ খ্যাত মোদী এখন পর্যন্ত এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দাওয়াতই পাননি! পাবেন বলে এমনটা কোন নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। উল্লেখ করা যেতে পারে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ‘গ্রস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন’ এর কারণে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র দামোদর মোদিকে আমেরিকা প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তৎকালীন সবগুলো সরকার। পরবর্তীতে প্রধানবন্ত্রী নির্বাচন হবার পরে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়া হয় আমেরিকার পক্ষ থেকে।
গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প। তিনি আগামী ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন।
ট্রাম্পের ক্ষমতাগ্রহণ-সংক্রান্ত প্রস্তুতি দলের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ফক্স নিউজকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। এ সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ট্রাম্পের আমন্ত্রণে শি জিনপিং সাড়া দিয়েছেন কি না? জবাবে ক্যারোলিন বলেন, বিষয়টি নির্ধারিত হবে। চীনা প্রেসিডেন্ট ছাড়াও অন্যান্য বিশ্বনেতাকে ট্রাম্প তার শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কিন্তু তাদের কারোর নাম নির্দিষ্ট করে বলেননি ক্যারোলিন।
শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্বনেতাকে আমন্ত্রণ জানানোর ব্যাপারে ক্যারোলিন বলেন, এটা একটা উদাহরণ। ট্রাম্প এমন দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে একটি খোলামেলা আলোচনার পথ তৈরি করছেন, যেগুলো শুধু যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র নয়, প্রতিপক্ষ-প্রতিযোগীও। ট্রাম্প যে কারোর সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছুক। তবে তিনি সব সময় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে এগিয়ে রাখবেন। ট্রাম্পের আমন্ত্রণের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু চীনা দূতাবাস কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পরপরই তাঁকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বার্তায় চীনের প্রেসিডেন্ট বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার সম্পর্ক স্থিতিশীল, স্বাস্থ্যকর ও টেকসই করতে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। এদিকে ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনো আমন্ত্রণ পাননি বলে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর)এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ক্রেমলিন।