পুরো আরব উপদ্বীপে সামরিক শক্তিতে শীর্ষে রয়েছে ইরান। দেশটির ধারেকাছে আছে কেবল ইসরায়েল। তবে এই অঞ্চলের আরেকটি দেশ আছে, যাদের দীর্ঘ দিনের আকাঙ্খা, ইরানকে টক্কর দেওয়া। দেশটির নাম সউদি আরব। আর এমন দুঃসাহসী স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে চান সউদির তরুণ তুর্কি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। নানা নাটকীয়তার পর যুবরাজের মর্যাদা দেন ছেলেকে সৌদি বাদশাহ। অবশ্য ক্ষমতায় বসেই ছেলেকে প্রতিরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তুলে দেন সৌদি বাদশাহ।
অল্প বয়সেই এত ক্ষমতার মালিক হয়ে, দুর্বল ইয়েমেনের ওপর নিজের ক্ষমতার ছড়ি ঘোরানো শুরু করেন যুবরাজ সালমান। ইয়েমেনের বিদ্রোহীরা, দেশটির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করলে এগিয়ে আসে সউদি। সৌদির নেতৃত্বের আরব উপদ্বীপের কয়েকটি দেশ ইয়েমেনে যৌথ অভিযান শুরু করে।
কিন্তু মার্কিন অস্ত্রশস্ত্র ও প্রযুক্তি নিয়েও মার খেতে হয় সৌদিকে। শেষ পর্যন্ত সৌদিকে ইয়েমেন থেকে অনেকটা লেজ গুটিয়ে পালিয়ে আসতে হয়। এরপরই যুবরাজ মোহাম্মদ বুঝতে পারেন, মধ্যপ্রাচ্যের নেতা হওয়ার জন্য ভিন্ন কৌশল নিতে হবে। শুরু হয়, ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরির নতুন এক খেলা। এতে যুবরাজ মোহাম্মদ এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা ফিলিস্তিন ইস্যুর সমাধান ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক শক্তিধর দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা।
সেই প্রচেষ্টায় অনেকটা এগিয়েও গিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ। ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির বন্ধুত্বের কাজটা প্রায়ই সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু গাজা যুদ্ধ, সেই রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
তবে সামরিক শক্তি বাড়ানোর রাস্তাটা এখনও খোলা আছে সৌদির সামনে। এবার সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অত্যাধুনিক সাবমেরিন বিধ্বংসী টর্পেডো কিনছে সৌদি।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সৌদির কাছে ২০টি MK 54 MOD 0 Lightweight টর্পেডো বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এতে করে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ হুমকি মোকাবিলায় সৌদি আরবের অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধ সক্ষমতা আরও বাড়বে। সৌদির সঙ্গেই যে যুক্তরাষ্ট্র আছে, তা বার বার জোর দিয়ে বলেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। এর আগে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা। এরপরই কপাল খুলে যায় সউদির।