শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ও তার স্ত্রী, ছেলে ও ভাইসহ ১৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তলব করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তাদের ব্যাংক হিসাব চেয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে চিঠি দিয়েছে। ট্যাক্স রিটার্নের সঙ্গে আয়-ব্যয়ের মিল আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতেই এ তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। বুধবারের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে তথ্য দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে বলেছে বিএফআইইউ।
বিএফআইইউয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে উল্লেখিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে কোন হিসাব বর্তমানে বা ইতঃপূর্বে এমটিডিআর, সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব বা অন্য কোন ধরনের হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সে সকল হিসাবের যাবতীয় তথ্যাদি জরুরি ভিত্তিতে পাঠাতে হবে। একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রদিসহ হিসাব খোলার ফর, কেওয়াইসি প্রোফাইল ফরম, টিপি, শুরু হতে হালনাগাদ লেনদেন বিবরণী প্রভৃতির দুই কপি করে সত্যায়িত ছায়ালিপিও জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিএফআইইউয়ের চিঠিতে যেসব নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো হলো, শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, পিতা শেখ আব্দুল হামিদ। আব্দুল হাই বাচ্চুর স্ত্রী মিসেস শিরীন আক্তার, মেয়ে শেখ রাফা হাই ছেলে, শেখ ছাবিদ হাই (অনিক)। তাদের সকলের বর্তমান ঠিকানা দেওয়া হয়েছে বাড়ী নং২/২-এ, রোড নং ০৪, ডিওএইচএস (পুরাতন), বানানী ঢাকা। আব্দুল হাই বাচ্চুর ভাই ও বোনেদের নাম ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন, শেখ ওয়াহিদুজ্জামান, শেখ খালেকুজ্জামান, শেখ শাহরিয়ার পান্না, শেখ সায়িদা ভুলু, শেখ মমতাজ রুমি, শেখ শিউলি ও শেখ জনি। তাদের সকলের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, গ্রাম ও ডাকঘর আডুয়ার দীহি, থানা মোল্লারহাট, জেলা-বাগেরহাট। এছাড়া বিএম কম্পিউটার্স, ক্রাউন প্রোপার্টিজ ও ইডেন ফিসারিজ লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবও চাওয়া হয়েছে।
বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেংকারীর মূল হোতা হিসাবে ধরা হয় তৎকালীন বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুকে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে মোট সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ রয়েছে বাচ্চুর বিরুদ্ধে। ঋণপত্র যাচাই না করে জামানত ছাড়া, জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দানসহ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বিধি বহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে। প্রায় চার বছর অনুসন্ধান শেষে এই অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় ২০১৬ সালে রাজাধানীর তিনটি থানায় ১৫৬ জনকে আসামি করে ৫৬টি মামলা করে দুদক।
শেখ ওয়াহিদুজ্জামান বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলালের পিএস। শেখ ওয়াহিদুজ্জামান বেসিক ব্যাংকের থেকে ব্যাপক হারে সুবিধা নিয়েছেন। বিএফআইইউয়ের চিঠিতে যে তিনটি প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে সেগুলো বাচ্চুর ভাইয়ের।