গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় এক গৃহবধূ খুনের ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও অর্থদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. ফজলে এলাহী ভূইয়া ওই রায় দিয়েছেন।
নিহত সাজেদা (২৮) কালীগঞ্জ উপজেলার দূর্বাটি গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী নবী হোসেনের স্ত্রী। দণ্ডিত আলমগীর হোসেন (৩১), কালীগঞ্জ উপজেলার ছোট দেউলিয়া এলাকার সফুর উদ্দিনের ছেলে।
গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম জানান, রায়ে মামলার একটি ধারায় আলমগীরকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড অপর একটি ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আরেক ধারায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
গাজীপুর আদালতের অতিরিক্ত পিপি মো. আতাউর রহমান মামলার বরাত দিয়ে জানান, গত ২০০৮ সালের ৫ আগস্ট রাত ৯ টার দিকে রাতের খাবার সেরে গৃহবধূ সাজেদা তার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে তাদের টিনের ছাপড়া ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১১টার সময় নিহতের ছেলে মো. আরিফের ডাক-চিৎকার শুনে নবী হোসেনের বড় ভাই নজরুল ইসলাম ও তার স্বজনরা ঘরে গিয়ে সাজেদার রক্তাক্ত লাশ ও তার মেয়ে সাগরিকাকে (ধারালো অস্ত্রের আঘাতে) আহতাবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে পড়ে দেখেন। এসময় তারা ঘরের মেঝেতে সিধকাটা এবং রক্তাক্ত ছেঁনি, রড, শাবল দেখতে পান। ঘটনার পরদিন নিহতের ভাসুর নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার এক মাস আগে সাজেদার স্বামী চাকরি করতে মালয়েশিয়া চলে গিয়েছিলেন।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার এসআই মো. জহির হোসেন এলাকায় সোর্স লাগিয়ে আলমগীরকে গ্রেফতার করেন। এসআই জহির দীর্ঘ তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে আলমগীরের স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে এলাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে অসৎ উদ্দেশ্যে আলমগীর সংগোপনে সিদ কাটিয়া ঘরের ভেতরে ঢুকে। এসময় আলমগীরকে চিনে ফেলায় ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে গৃহবধূ সাজেদাকে হত্যা এবং তার মেয়ে সাগরিকাকে আহত করে পালিয়ে যায়।
১১ জনের সাক্ষ্য শেষে বুধবার দুপুরে আদালতের বিচারক আলমগীরকে ওই দণ্ডাদেশ দিয়েছে। রায় ঘোষণাকালে আলমগীর আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন গাজীপুর আদালতের অতিরিক্ত পিপি মো. আতাউর রহমান, মো. আব্দুল করিম, মো. মকবুল হোসেন কাজল এবং আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মাহমুদুর রহমান খান।