লাইটারেজ জাহাজ সংকটে নৌপথে পণ্য পরিবহনে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। প্রায় সহস্রাধিক লাইটারেজ জাহাজ পণ্য নিয়ে দেশের বিভিন্ন ঘাটে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে প্রায় ৬০ থেকে ৭০টি মাদার ভেসেল (বড় জাহাজ) আমদানি করা লাখ লাখ টন পণ্য নিয়ে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
জাহাজ মালিকরা জানান, নৌপথে আমদানি করা পণ্যের পরিবহন আগের চেয়ে বেড়েছে। কিন্তু লাইটারেজ জাহাজ তেমন একটা বাড়েনি। মহাসড়কে ওজন পরিমাপের স্কেলের কারণে ট্রাক বা কাভার্ডভ্যানে করে নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে না। এছাড়া সড়ক পথে পরিবহনে নানা সমস্যার কারণে ব্যবসায়ীরা নৌপথে পণ্য পরিবহনে আগ্রহী হয়ে উঠছে। জাহাজ মালিকদের সংগঠন ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল সূত্র জানায়, এই সংগঠনের অধীনে প্রায় ১৪শ’ জাহাজ রয়েছে। এরমধ্যে এক হাজার ৫০টি জাহাজ বিভিন্ন ঘাটে অবস্থান করছে। বহির্নোঙ্গর থেকে পণ্য নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে খালাস করে ফিরে আসতে ২/৩ দিনের বেশি সময় লাগার কথা নয়। কিন্তু লাইটারেজ জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করতে ব্যবসায়ীরা ২৫/৩০ দিন সময় নিচ্ছেন। এতে শতশত লাইটারেজ জাহাজ আটকা পড়ছে। ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের কর্মকর্তা আতাউল কবির ইত্তেফাককে বলেন, প্রতিদিন ৩০/৩৫টি লাইটারেজ জাহাজ পণ্য নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে যাচ্ছে। পণ্য খালাসে বিলম্বের কারণে জাহাজ ফিরে আসতে সময় লাগছে। প্রায় ৫০টির মতো মাদার ভেসেল পণ্য নিয়ে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি বাড়ালেও পণ্য রাখার জন্য গুদাম নির্মাণ করেননি। ফলে গুদাম সংকটে দীর্ঘদিন পণ্য জাহাজে রাখতে হচ্ছে। লাইটারেজ জাহাজগুলো গুদামে পরিণত করেছেন ব্যবসায়ীরা। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহাবুবুল আলম ইত্তেফাককে বলেন, আমদানি আগের চেয়ে বেড়েছে। কিন্তু পণ্য পরিবহনে জাহাজ বাড়েনি। নতুন লাইটারেজ জাহাজের লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে না। এতে জাহাজ সংকট দেখা দিয়েছে।
জানতে চাইলে লাইটারেজ জাহাজ মালিক জাহাঙ্গীর আলম দোভাষ ইত্তেফাককে বলেন, পণ্য খালাসের ঘাটগুলো পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। এতে পণ্য খালাসে সময় বেশি লাগছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দুইশ’ থেকে আড়াইশ’টি নতুন লাইটারেজ জাহাজ যুক্ত হবে। ইতিমধ্যে ৫০/৬০টি যুক্ত হয়েছে। বাকিগুলোর নির্মাণ কাজ ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। সবগুলো জাহাজ নামলে সংকট থাকবে না।