• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সড়ক অবরোধ না করে ন্যায্য দাবি নিয়ে আলোচনায় আহ্বান: শিক্ষা উপদেষ্টা স্বৈরাচারের দোসররা মাথাচারা দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে: তারেক রহমান নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে প্রতিরোধ করা হবে : সারজিস ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে কোন বাধা নেই, আদালত ৩৪০ মিসাইল দিয়ে ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর হামলা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি রহস্যময় ড্রোনের দেখা মিলল ব্রিটেনের তিন মার্কিন বিমানঘাঁটির আকাশে নানা আলোচনা মির্জা ফখরুলের স্ট্যাটাস ঘিরে সড়ক অবরোধ করে আজও রিকশাচালকরা বিক্ষোভ করছেন পাচার করা অর্থ ড. ইউনূসের ইমেজ কাজে লাগিয়ে ফেরত আনা সম্ভব হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যয় ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ

৪৫ বছরে ধান উৎপাদন তিনগুণের বেশি

আপডেটঃ : রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

দেশে প্রধান খাদ্য ধান ও গম উৎপাদন ৪৫ বছরের ব্যবধানে তিনগুণের বেশি বেড়েছে। ১৯৭০-৭১ অর্থবছরে বাংলাদেশে ধান ও গম খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছিল এক কোটি ৯ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিক টন। ২০১৪-১৫ অর্থবছর শেষে খাদ্য উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৬০ লাখ ৫৮ হাজার টনে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খাদ্যশস্য নিয়ে করা সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। জনসংখ্যা দ্বিগুণের সামান্য বেশি বাড়লেও ৪৫ বছরে খাদ্য উত্পাদন তিনগুণের বেশি বেড়েছে বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। গেল ৪৫ বছরে উল্লেখযোগ্য ফসলের কৃষি পরিসংখ্যান শীর্ষক প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশ করেছে বিবিএস।
এতে বলা হয়েছে, ৪৫ বছরে খাদ্যশষ্যের উৎপাদন বেড়েছে ২ কোটি ৫০ লাখ ৮০ হাজার টন। প্রতিবেদনে ১৯৭০-৭১ অর্থবছর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত কৃষি উৎপাদনের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। চাষের জমির পরিমাণ, একর প্রতি জমিতে ফসল উত্পাদনের পরিমাণসহ আউশ, আমন ও বোরো ফসল উৎপাদনের তথ্য রয়েছে প্রতিবেদনে। এ ছাড়া আলু ও গম চাষসহ পাটের উৎপাদনের তথ্যও রয়েছে।
মূলত বোরো ধান চাষ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশে চালের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৫ বছরে বোরো ধানের ফলন বেড়েছে প্রায় ৯ গুণ। হেক্টরপ্রতি ফলনেও সবচেয়ে এগিয়ে আছে বোরো ফসল। বাড়তি উৎপাদনশীলতার কারণে বোরো চাষের আওতায় জমির পরিমাণও বাড়ছে। ১৯৭০-৭১ অর্থবছর ৯ লাখ ৮২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাল উত্পাদন হয়েছে ২১ লাখ ৯২ হাজার টন। সর্বশেষ অর্থবছর ৪৮ লাখ ৪০ হাজার হেক্টরে বোরো ফলেছে ১ কোটি ৯১ লাখ ৯২ হাজার টন। এ হিসাবে ৪৫ বছরে বোরো চালের ফলন বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৫ গুণ।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আমন, আউশ ও বোরো মিলে ১৯৭০-৭১ অর্থবছরে মোট ৯৯ লাখ ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। এ হিসাবে হেক্টর প্রতি ১ দশমিক শূন্য ৯৬ টন চাল হয়েছে প্রতি একর জমিতে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তিন ফসল মিলে ধান চাষের আওতায় এসেছে ১ কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমি। আর হেক্টরপ্রতি ফলন দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৪১ টন চাল। এ হিসাবে একই জমিতে চালের উত্পাদন বেড়েছে ২ দশমিক ৭৭ গুণের বেশি।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আউশ ধানের আওতায় আসা জমির পরিমাণ কমে আসছে। ১৯৭০-৭১ অর্থবছরে ৩১ লাখ ৯১ হাজার হেক্টর জমিতে আউশের উত্পাদন হয়েছে ২৮ লাখ ৬৩ হাজার টন। হেক্টর প্রতি ফলনের পরিমাণ দশমিক ৯০ টন। ১৯৭৫-৭৬ অর্থবছর সর্বোচ্চ ৩৪ লাখ ২১ হাজার হেক্টর জমিতে আউশের চাষ হয়েছে। এর পর থেকে আউশের চাষ কমছে। সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছর ১০ লাখ ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ফসল উঠেছে ২৩ লাখ ২৮ হাজার টন। হেক্টরপ্রতি ফলন দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ২৩ টন। একই জমিতে ৪৫ বছরে আউশের উৎপাদনশীলতা বেড়েছে ২ দশমিক ৪৮ গুণ। মূলত বোরো ফসলের জন্য অন্যান্য ধানের আবাদি জমি কমেছে।
আমন ধানের আওতায় জমির পরিমাণ ৪৫ বছর ধরে প্রায় একই অবস্থানে আছে। ১৯৭০-৭১ অর্থবছরে ৫৭ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাল ফলেছে ৫৮ লাখ ১৩ হাজার টন। হেক্টরপ্রতি ফলন এসেছে ১ দশমিক ০১ টন। সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছর ৫৫ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে ফলেছে ১ কোটি ৩১ লাখ ৯০ হাজার টন আমন চাল। হেক্টরপ্রতি ফলনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৩৯ টনে। এ হিসাবে উৎপাদনশীলতা বেড়েছে প্রায় ২ দশমিক ৩৫ গুণ। চাষের জমি সামান্য কমে আসলেও আমনের ফলন বেড়েছে প্রায় ২ দশমিক ২৮ গুণ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৯৭০-৭১ সালে আড়াই লাখ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হতো। সে সময় ফলন হয়েছিল হেক্টরপ্রতি ফলন হতো ৩ দশমিক ২৮৮ মেট্রিক টন। সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৪ দশমকি ৭১ লাখ হেক্টরে আলু চাষ হয়েছে এবং হেক্টর প্রতি ফলন ১৯ দশমিক ৬৪ মেট্রিক টন পাওয়া গেছে।
স্বাধীনতার বছর ১ লাখ ২৬ হাজার হেক্টর জমিতে ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন গম উৎপাদন হয়েছে। হেক্টরপ্রতি গমের ফলন ছিল শূন্য দশমিক ৮৭ টন। সর্বোচ্চ ৮ লাখ ৮২ হাজার হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয় ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছর। ওই বছর গমর ফলন দাঁড়ায় ১৯ লাখ ৮ হাজার টনে। পরবর্তীতে গম চাষের আওতায় জমির পরিমাণ ও ফলন কমে আসছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছর মোট ৪ লাখ ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ৩ দশমিক ০৯ টন হিসাবে ফলন দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৪৮ হাজার টনে।
১৯৭০-৭১ অর্থবছর ৯ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের ফলন হয় ৬০ লাখ ১ হাজার বেল। এ হিসাবে  ৬৮ লাখ বেল। হেক্টারপ্রতি ফলন ছিল ৭ দশমিক ৪৭ বেল। এর পর থেকেই পাট চাষের আওতায় জমির পরিমাণ কমছে। ১৯৮২-৮৩ অর্থবছর ৫ লাখ ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের উৎপাদন নেমে আসে ৪৯ লাখ ২০ হাজার বেলে। ২০০৪-০৫ অর্থবছর পাট চাষের আওতায় জমির পরিমাণ নেমে আসে ৩ লাখ ৯০ হাজার হেক্টরে। একই বছর ফলন নেমে আসে ৪০ লাখ ৩৫ হাজার বেলে। সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছর পাট চাষের আওতায় জমির পরিমাণ সামান্য বেড়ে ৬ লাখ ৭৩ হাজার হেক্টরে উন্নীত হয়েছে। একই সময়ে ফলন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ লাখ ১ হাজার বেলে। হেক্টর প্রতি পাট উৎপাদন হচ্ছে ১১ দশমিক ১৫ বেল।
এদিকে কৃষিমন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দানাদার খাদ্যশস্য (চাল, গম ও ভূট্টা) উৎপাদন হয়েছে ৩৮৮ দশমিক ১৫ লাখ  মেট্রিক টন। এর মধ্যে চাল ৩৩৮ দশমিক ১৩ লাখ মেট্রিক টন, গম ১৪ দশমিক ২৩ লাখ মেট্রিক টন এবং ভূট্টা ৩৫ দশমিক ৭৮ লাখ মেট্রিক টন ।
এছাড়া শাকসবজি ১৬০ দশমিক ৪২ লাখ মেট্রিক টন, আলু ১১৩ দশমিক ৩২ লাখ মেট্রিক টন, ডাল জাতীয় ফসল ১০ দশমিক ২৬ লাখ মেট্রিক টন, তৈল জাতীয় ফসল ১০ দশমিক ৫৮ লাখ মেট্রিক টন এবং মসলা জাতীয় ফসল ৩৫ দশমিক ৬০ লাখ মেট্রিক টন উত্পাদন হয়েছে ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ