সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীর বাজারে ডিমের দাম কমেছে। এ তালিকায় রয়েছে সবজিও। এছাড়া স্থিতিশীল রয়েছে চালের দাম। গত এক মাস আগে চালের দাম কিছুটা বাড়লেও এখন সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি। শুক্রবার রাজধানীর কাওরানবাজার ও মহাখালী বাজারসহ কয়েকটি বাজারে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে নিত্যপণ্যের দামের এ চিত্র পাওয়া যায়। এদিকে ডিম ব্যবসায়ীরা বলেছেন, হঠাৎ করে গরম পড়ায় ডিমের চাহিদা কমেছে। অন্যদিকে বাজারে ডিমের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে দাম কমে গেছে। খুচরাবাজারে এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ডিমের দাম কমলেও একদিনের মুরগীর বাচ্চা, ওষুধ ও খাবারের দাম কমেনি। ফলে ডিম বিক্রি করে খামারীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
গাজীপুরের পোলট্রি খামারি মহসিন বলেন, মুরগি পালনের আনুষাঙ্গিক ব্যয় কমাতে না পারলে লোকসান ঠেকাতে খামার বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তিনি বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় বর্তমানে খামারে ডিমের উৎপাদন বেশী হচ্ছে। অন্যদিকে গরম পড়ায় ডিমের চাহিদা কমে গেছে। ফলে লোকসানে ডিম বিক্রি করতে হচ্ছে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) হিসাব অনুযায়ী, গত বছর প্রতি হালি ডিমের গড় দাম ছিল ৩২ টাকা। যা চলতি বছর ২৪ টাকায় নেমে এসেছে। এরআগে ২০১৬ সালে প্রতি হালি ডিম ৩৪ টাকা পর্যন্ত উঠে।
এদিকে ডিমের পাশাপাশি সবজির দামও কমতির দিকে। শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি সিম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, টমেটো ২০ টাকা, করল্লা ৫০ টাকা, আলু ১৬ থেকে ১৮ টাকা, মূলা ২০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, শশা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, লতি ৫০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, বরবটি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁরস ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, দেশী পেঁয়াজ ৪০ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ কেজি দরে বিক্রি হয়। এছাড়া প্রতিটি ফুলকপি, বাঁধাকপি ১৫ থেকে ২০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। বাজারে নতুন সবজি সজনে উঠেছে। প্রতি কেজি সজনে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।
স্থিতিশীল রয়েছে মাছ ও মাংসের দাম। শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি রুই ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কাতল ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, সিলভার কার্প ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা ও চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি গরুর মাংস ৪৮০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা দরে বিক্রি হয়।
এদিকে নতুন করে আর চালের দাম বাড়েনি। গত এক মাস আগের বাড়তি দরেই খুচরা বাজারে চাল বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার বাজারে মোটা চাল ইরি/স্বর্ণা ৪৩ থেকে ৪৫ টাকা, পাইজাম/লতা ৪৬ থেকে ৫৪ টাকা, বিআর-আটাশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, নাজিরশাইল, মিনিকেট মানভেদে ৬০ থেকে ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় চলতি মার্চ মাস থেকে সরকার সারাদেশে খোলাবাজারে চাল বিক্রি ( ওএমএস) কার্যক্রম শুরু করেছে। ৩০ টাকা কেজি দরে এ চাল বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া দ্বিতীয় পর্বের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ হতদরিদ্র মানুষকে ১০ টাকা কেজি দরে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দিচ্ছে সরকার। তাই নতুন করে চালের দাম আর বাড়বে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।