কর্মক্ষেত্রে নিজেকে জনপ্রিয় করতে চায় অনেকেই, কিন্তু তা পেরে ওঠেনা কেউ কেউ। আবার অনেকেই এই ব্যপারে শতভাগ সফল। কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আপনার ক্যারিয়ার। এজন্য আপনার থাকা চাই কিছু ইতিবাচক ও জনপ্রিয় গুণাবলি। এসব গুণাবলির চর্চার মাধ্যমেই মানুষের মাঝে পছন্দের ব্যক্তি হয়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করেন ক্যারিয়ার বিশ্লেষকরা। হাসি মুখে কথা বলুন : হাসি হলো ক্যারিয়ার গঠনের যে উপাদানগুলো রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম উপাদান। অনেক সময় যে কাজ অনেক টাকা বা সম্পদের বিনিময় আদায় করা সম্ভব হয় না এমন সব জিনিস হাসির মাধ্যমে আদায় করা সম্ভব হয়। মিষ্টি হাসির উৎস হলো হৃদয়। আন্তরিক হাসি অন্যের অন্তরকে স্পর্শ করে। কেবল অন্তরই পারে অপরের অন্তরের ভাষা বুঝতে। হাসি হৃদয়ের ভাষা। আপনার চারপাশের মানুষের সাথে অন্তরের ভাষায় তথা হাসিমুখে কথা বলুন। অন্যদের অগ্রাধিকার দিন :খাবারের টেবিলে, আলোচনার আসরে কিংবা গাড়িতে ওঠার লাইনে—সর্বত্র অন্যকে অগ্রাধিকার দিন। অন্যকে অগ্রাধিকার দানের মাধ্যমে আপনি তাদের মনে অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।
কাজের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন :আপনি যখন কারো কথা শুনেছেন, মূলত তখন তাকে সম্মান করছেন। প্রত্যেকের একটা আকুতি আছে, কথা আছে—সে চায় মানুষ তার আবেদনকে সম্মান করুক। ভালো শ্রোতা খুব সহজেই মানুষের মনে দাগ কাটতে পারে। অন্যকে সাহযোগিতা করার চেষ্টা করুন :জীবন সংক্ষিপ্ত। চিরকাল বেঁচে থাকার কোনো সুযোগ এ পৃথিবীতে নেই। যতটা সম্ভব মানুষকে সহযোগিতা করুন—অর্থসম্পদ দিয়ে, বুদ্ধি, পরামর্শ দিয়ে, শিক্ষা দিয়ে। যেভাবে আপনি পারেন, যতটুকু পারেন, সাধ্যের সীমায় সর্বোচ্চটুকু মানুষের জন্য করুন। পরিণামে ধূলির পৃথিবীতে না হোক, মানুষের হূদয়ের মণিকোঠায় আপনি বেচেঁ থাকবেন অনেক কাল। কাজের কৃতিত্ব দিন :দলগত বা যৌথ কাজে অন্যকে সাফল্যের স্বীকৃতি দান করুন। কৃতিত্ব নিজে না নিয়ে অন্যদের উপহার দিন, তাহলে আপনিও স্বীকৃতি পাবেন। কৃতজ্ঞতা স্বীকার করুন :কেউ কোনোভাবে সামান্যতম সহযোগিতা করে থাকলে স্পষ্ট ভাষায় তাকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। আপনার চেহারায় কৃতজ্ঞতার ভাব ফুটিয়ে তুলুন। আপনার সাফল্যের পেছনে কারো অবদান থাকলে তাকে ‘থ্যাংকস লেটার’ লিখুন। নিজের ভুলে ক্ষমা প্রার্থনা করুন :
কোনো ভুলত্রুটি হলে, আপনার দ্বারা কারো অধিকার ক্ষুন্ন হলে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন। অথবা কোনো মানবিক ব্যাপারে সাহায্যপ্রার্থীকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে অসমর্থ হলে বিনয়ের সাথে অপারগতার কথা বলুন। ক্ষমা প্রার্থনা করুন, সেইসাথে আপনার সামর্থ হলে তার জন্য কিছু করতে চেষ্টা করবেন বলে আশ্বস্ত করুন। ইতিবাচক পরিবর্তনের কথা বলুন :মরুভূমির কথা শুনলে দৃষ্টি হাহাকার করে ওঠে। ঝর্ণার কথা শুনলে চোখ শীতল হয়— যেন চোখের সামনে দুপাশ ছাপিয়ে ঝর্ণার জল বয়ে যাচ্ছে। আমাদের কথাগুলোরও এমন প্রভাব আছে। তাই মানুষকে ইতিবাচক পরিবর্তনের কথা বলুন, সুসংবাদ দিন। ঝরাপাতার কান্না ভুলে সবুজ পাতার আগমনী গান শুনিয়ে দিন। সমস্যার কথা না বলে সমাধানের কথা বলুন। মানুষের মনে আশার আগুন জ্বালিয়ে তুলুন। বিনয়পূর্ণ আচরণের অভ্যাস করুন :বিনয় চারিত্রিক অলংকার। বিনয় ছাড়া অন্যান্য চারিত্রিক গুণ মলিন, আলোহীন। যতটা সম্ভব মানুষের সাথে সুন্দর আর বিনয়পূর্ণ আচরণ করুন। বিনয় চারিত্রিক দুর্বলতা নয়, বিনয় চারিত্রিক শক্তির ধারক। ক্ষমা করতে শিখুন : মানুষের ছোটখাটো ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করুন। ক্ষমাশীলতা মহোত্তম চারিত্রিক গুণ। আল্লাহ্ তায়ালার একটি সুন্দর নাম আল-গাফুর—তিনি অসীম ক্ষমাশীল। আল্লাহর ক্ষমার গুণ নিজের মধ্যে লালন করুন—ফলে মানুষও আপনাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবে।